বাজারে মোটা চালের দাম বাড়ানোর বিষয়ে বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির নেতদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা জানান খাদ্যমন্ত্রী।
কামরুল ইসলাম বলেন, বাজারে চিকন চালের দাম খুব একটা বাড়েনি।
তিনি বলেন, আমাদের তিন লাখ মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহের টার্গেট ছিল। এ মুহূর্তে তা সংগ্রহ হয়েছে তিন লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন। মিল মালিকদের সঙ্গে এ পর্যন্ত চুক্তিপত্র হয়েছে চার লাখ ২৬ মেট্রিক টনের। ১৫ মার্চ পর্যন্ত আমন সংগ্রহের অভিযান চলবে।
এখনও প্রতিদিন চারশ’ থেকে সাতশ’ মেট্রিক টন পর্যন্ত চাল আসছে। চালের দাম যদি বেশি থাকতো বা অসামঞ্জস্য থাকতো তাহলে মিল মালিকরা আমাদের ৩৩ টাকা দরে দিতে পারতো না, বলেন খাদ্যমন্ত্রী।
মোটা চালের দাম বাড়ার কারণ শুল্ক আরোপ বলেও জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, বাজারে মোটা চালের দাম বেশি হওয়ার কারণ হলো, গত বছর এ সময় ভারত থেকে চাল এসেছে আড়াই থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন, বিনা শুল্কে। এখন সরকার শুল্ক আরোপ করায় এ সময় পর্যন্ত চাল এসেছে মাত্র ৩৭ হাজার মেট্রিক টন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, শুল্ক আরোপ করার ফলশ্রুতিতে যারা ভারত থেকে ফ্রি স্টাইল চাল আমদানি করতো, ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পাইকারি বাজারের সঙ্গে দাম বৃদ্ধি করেছে। তারা মনে করছে, কোনো রকম একটা অবস্থার সৃষ্টি করে আমরা যেনন শুল্কটা প্রত্যাহার করি। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই শুল্ক প্রত্যাহারের কোনো প্রশ্নই আসে না।
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ফ্রি স্টাইলে মোটা চাল নিয়ে আসায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। চালের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছিল। এবার ট্যাক্স আরোপ করার ফলে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আমরা কৃষকদের লাভবান করতে চাই। দাম একটু বেশি থাকলে কৃষরা লাভবান হয়। কৃষকরা অত্যন্ত খুশি হয়। কাজেই আগামী দু’মাস পর বোরো মৌসুমে সংগ্রহ শুরু হলে মোটা চালের বাজারে কোনো অসুবিধা হবে না।
মিল মালিকদের সঙ্গে আলাপ করেছি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সংকট হবে না। চাল পর্যাপ্ত মজুদ আছে। মোটা চালের কোনো সমস্যা হবে না। এই মুহূর্তে প্রায় নয় লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশষ্য মজুত আছে।
পাইপলাইনে আছে দুই লাখ টন গম ও ৯০ হাজার টন চাল। আগামী ১৮-২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৫০ হাজার টন দেশে পৌঁছে যাবে বলেও জানান খাদ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশীদ বলেন, মোটা চালের বাজার বেড়েছে এটা সত্য। যতটুকু বেড়েছিল তা থেকে আবার কেজিতে এক টাকা কমে গেছে। আমরা আশা করি নতুন করে আর চালের বাজার বাড়ার সম্ভাবনা নেই। দেশে পর্যাপ্ত চাল আছে। যে অবস্থায় গেছে তা স্থিতিশীল থাকবে।
তিনি বলেন, পাইকারি দামে বাজার তেমন বাড়েনি। কিন্তু রিটেইলে কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে তারা সুযোগ-সুবিধা পেলে কেজিতে দু’এক টাকা বেশি নিয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
এমআইএইচ/এএটি/এমজেএফ