সেই গাঢ় সবুজ রঙা ধানেই সোনালী স্বপ্ন বুনছেন হাজারো কৃষক। অনেকটা বিরূপ আবহাওয়া মাথায় নিয়ে রোপা-আউশ মৌসুমের ধান নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
রোপনকাল অনুযায়ী কখনো নিড়ানিও দিতে হচ্ছে। আবার প্রয়োগ করতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় সার ও কীটনাশক। পানির অভাব দেখা দিলে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। বিগত বছরগুলোয় উৎপাদিত ধানের ভাল দাম পাওয়ায় মনে অনেকটা আনন্দ নিয়েই কষ্টকর কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা।
বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, নন্দীগ্রাম, শেরপুর উপজেলা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে চলতি রোপা-আউশ মৌসুমের ধানচাষ সম্পর্কে সরেজমিনে সম্যক ধারণা পাওয়া গেল।
তবে সাম্প্রতিক বন্যায় যমুনা তীরবর্তী এই জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় ১ হাজার ৫৮০ হেক্টর আউশের জমি তলিয়ে যায়। এরপরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এ জেলায় চলতি মৌসুমের ধান।
রফিকুল ইসলাম, আবু সাঈদ, ইকবাল হোসেন, আব্দুস ছামাদসহ একাধিক কৃষক বাংলানিউজকে জানান, তাদের অন্য কাজ জানা নেই। কৃষিকাজই প্রধান কর্ম তাদের। এছাড়া বিগত বছরগুলোয় ধানের দামও ভাল পেয়েছেন। বর্তমানেও ধানের দরও ভাল যাচ্ছে। তাই তারা উদয়াস্ত শ্রম দিচ্ছেন চাষের কাজে।
এসব কৃষক জানান, সাধ্য অনুযায়ী বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা গেল রোপা-আউশ মৌসুমের তুলনায় এবার অনেক বেশি জমিতে এ মৌসুমের ধান লাগিয়েছেন। রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আউশের জমি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি রোপা-আউশ মৌসুমে এ জেলার ১২টি উপজেলায় ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি। অথচ লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে ধান চাষ হয়েছে ২২ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বাংলানিউজকে জানান, গেল মার্চের মাঝামাঝি থেকে বর্তমান মৌসুমটি শুরু হয়েছে। মে মাসের পুরোটা সময় ধরেই কৃষকরা জমিতে ধান লাগিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, রোপনের সময়ের ওপরই ধান বা যে কোনো ফসলের বেড়ে ওঠা নির্ভর করে। সে অনুযায়ী জেলার কিছু এলাকায় আগাম লাগানো ধানগাছে এরই মধ্যে পাকও ধরেছে। কিছু কৃষক নতুন ধান ঘরেও উঠিয়েছেন। তবে তাদের সংখ্যা হাতে গোনা।
ওবায়দুর রহমান মণ্ডল আরো জানান, চলতি মৌসুমে চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ হাজার ২৪২ মেট্রিক টন। এ জেলায় কৃষকরা ব্রি ধান-৪৮, পারিজাত, পাটজাত জাতের ধান চাষ করেছেন।
এসব জাতের ধানের চালের দাম মোটা চালের চেয়ে বেশি। ফলনও ভাল হবে। এতে বিগত বছরগুলোর মতো এবারও কৃষকরা বেশ লাভবান হতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
এমবিএইচ/জেএম