ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

বন্যা পরবর্তী সময়ে কৃষকদের কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
বন্যা পরবর্তী সময়ে কৃষকদের কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ

ঢাকা: চলতি আমন মৌসুমে দেশের যেসব অঞ্চলে বন্যা হয়েছে সেসব এলাকায় বন্যা পরবর্তী সময়ে কৃষকদের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
 
 

বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বা আংশিক হয়েছে এমন জমির ক্ষেত্রে- বন্যার পানিতে ভেসে আসা কচুরিপানা, পলি, বালি এবং আবর্জনা যত দ্রুত সম্ভব পরিষ্কার করতে হবে। বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর ৫-৭ দিন কাদাযুক্ত ধান গাছ পরিষ্কার পানি দিয়ে প্রয়োজনে স্প্রে মেশিন দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে।


 
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই সার প্রয়োগ করা ঠিক নয়, এতে ধান গাছ পচে যেতে পারে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার ১০ দিন পর ধানের চারায় নতুন পাতা গজানো শুরু হলে বিঘা প্রতি ৮ কেজি ইউরিয়া ও ৮ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
 
উঁচু জমিতে যেখানে বন্যার পানি ওঠেনি সেখানে রোপণকৃত বাড়ন্ত আমন ধানের গাছ (রোপণের ৩০-৪০ দিন পর) থেকে ২-৩টি কুশি রেখে বাকি কুশি সযত্নে শিকড়সহ তুলে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে অন্য ক্ষেতে রোপণ করা যেতে পারে।
 
যেসব এলাকায় বন্যায় উঁচু জমি তলিয়ে যাওয়ার কারণে বীজতলা করা সম্ভব নয় সেক্ষেত্রে ভাসমান অথবা দাপোগ বীজতলা তৈরি করে চারা উৎপাদন করা যেতে পারে।
 
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ব্রি উদ্ভাবিত আলোক সংবেদনশীল উফশী জাত যেমন- বিআর৫, বিআর২২, বিআর২৩, ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৪৬, ব্রি ধান৫৪ এবং নাইজারশাইলসহ স্থানীয় জাতগুলো রোপণ করতে হবে। এছাড়া ব্রি উদ্ভাবিত স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন জাত ব্রি ধান৫৭ ও ব্রি ধান৬২ও রোপণ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বীজতলা করা যাবে।
 
তবে উল্লিখিত জাতগুলো নাবীতে রোপণের ক্ষেত্রে প্রতি গোছায় চারার সংখ্যা ৪-৫টি এবং রোপণ দূরত্ব ২০*১৫ সে.মি.।
 
বিলম্বে রোপণের ফলে দ্রুত কুশি উৎপাদনের জন্য সুপারিশকৃত টিএসপি, জিপসাম ও জিংকসহ দুই তৃতীয়াংশ ইউরিয়া জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। অবশিষ্ট ইউরিয়া রোপণের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে।
 
যেসব এলাকা পুনরায় বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম (উঁচু ও মধ্যম উঁচু) সেসব জমিতে অঙ্কুরিত বীজ সরাসরি জমিতে ছিটিয়ে বপন করা যায়। সেক্ষেত্রে রোপণ পদ্ধতির চেয়ে ৫-৭ দিন আগাম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
 
বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া ধান গাছের যাবতীয় পরিচর্যা যেমন- আগাছা দমন, পোকা মাকড় ও রোগাক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা, সুষম পরিমাণে সার প্রয়োগ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সম্পূরক সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।
 
বন্যা পরবর্তীতে চারাগাছ সম্পূর্ণভাবে মাটিতে লেগে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ৬০ গ্রাম থিওভিট ও ৬০ গ্রাম পটাশ ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
 
বন্যা পরবর্তী সময়ে গাছে মাজরা, বাদামি ও সাদা-পিঠ গাছ ফড়িং, পাতা মোড়ানো এবং পামরি পোকার আক্রমণের হাত থেকে রক্ষার জন্য পোকা বিশেষে হাত জাল, পার্চিং এবং প্রয়োজন হলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।
 
দেশের উত্তরাঞ্চলে আগাম শীত আসার কারণে ১৫ সেপ্টেম্বর এবং মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে ২০ সেপ্টেম্বরের পর আমন ধান রোপণ করা উচিৎ নয়। এক্ষেত্রে আগাম রবি ফসলের আবাদ করা যেতে পারে।
 
বিস্তারিত তথ্যের জন্য নিকটস্থ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বা উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।