চলতি মৌসুমের চাষাবাদ করতে না পেরে বেকার হয়ে পড়ায় তাদের ঘরে দেখা দিয়েছে আর্থিক দৈন্যতা। তবে গত বছরের মতোই ফসল লাগাতে পেরেছিলেন কেউ কেউ।
সরেজমিনে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদের তীরঘেঁষে বাস করা ২৫ হাজার কৃষক পরিবার জলেভাসা জমিতে ফসল চাষেই জীবিকা নির্বাহ করেন। হ্রদে পানি বাড়তে থাকায় অর্থনৈতিকভাবে চরম বিপাকে পড়েছেন এসব কৃষকেরা। বিশেষত দীর্ঘদিন ধরে ডুবে থাকায় বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, নানিয়ারচর ও লংগদুর নিম্নাঞ্চলগুলোতে চাষাবাদ হচ্ছে না বললেই চলে।
কৃষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন হ্রদের পানিতে হাজার হাজার হেক্টর জমি তলিয়ে থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন তারা। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে দিনযাপন করছে অনেকে। অর্থনৈতিক সংকটে চাষের গরুগুলো পর্যন্ত বিক্রি করে দিচ্ছেন কেউ কেউ।
এসব জমিতে ফসল উৎপাদিত না হওয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছে স্থানীয় বাজারগুলোও। ফলে জেলার মানুষের চাহিদা মেটাতে বাইরে থেকে আনা সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
আগামী বছর খাদ্য সংকটে পড়ার আশঙ্কা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ও বেকার চাষি পরিবারগুলো। দ্রুত হ্রদের পানি কমাতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিও জানান তারা।
জেলা কৃষি নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণপ্রসাদ মল্লিক জানান, ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জলেভাসা জমিতে এবার আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। গত বছর হয়েছিলো ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। হ্রদের পানি বাড়তে থাকায় এবার ৩০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করতে পারেননি স্থানীয় কৃষকেরা। ফলে এ বছর ১ হাজার ১০০ মেট্রিকটন খাদ্য কম উৎপাদিত হবে।
তিনি জানান, গত বছর জেলায় ৩৩ হাজার মেট্রিকটন আমন, ৩৫ হাজার মেট্রিকটন বোরো ধান ও শীতকালীন সবজি এবং ৮ হাজার ৩৭৮ মেট্রিকটন তরমুজ উৎপাদন করা হয়েছিলো। হ্রদে পানি বাড়তে থাকায় এবং কর্তৃপক্ষ পানি না কমানোয় গত বছরের চেয়ে এ বছর খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে।
ফলে আগামী বছর জেলায় খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এই কৃষি কর্মকর্তাও।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৭
এএসআর