ধান কাটা শেষ হলেই নতুন চাল দিয়ে গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি ঘরে ঘরে তৈরি হবে দেশীয় নানারকম পিঠা। সেই সময়কে ছুঁতে কৃষাণ-কৃষাণিরা ধান কাটা, মারাই ও সেদ্ধ করতে এখন হাড় ভাঙা পরিশ্রম করছেন।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে কথা হয় মাঠে কাজ করা কয়েক কৃষকের সঙ্গে।
কৃষক লাল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এইবার অকাল বন্যায় যা সর্বনাশ করছে! আমন ঘরে তুলতে পারি কি না এই ভাবনায় কুব (খুব) ডরে আচলাম (ভয়ে ছিলাম)। শ্রমিক বাহার মিয়া বলেন, কয়েকটা ফসল মাইর গেছে এতে আমরা যারা শ্রমিক তারাও তো বেকায়দায় পড়েছি। কাজকাম আর ট্যাহা কোনোডাই তো আছিন (ছিলো) না। ফজলু মিয়া বলেন, অতীত চিন্তা করলে তো আর লাভ নেই। এখন আল্লাহ্র কাছে শুকরিয়া জানাই তিনি অন্তত এই ফসলডা আমরারে ঘরে তোলার ব্যবস্থা করে দিলেন।
এদিকে আমন ধান কাটাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনা সদর উপজেলা ও জেলা প্রশাসন নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৯টায় সদরের কাইলাটী ইউনিয়নের কাওয়ালীকোণা গ্রামে উৎসব শুরু হবে। জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম কামরুল হাসান শাহিনসহ সামাজিক, রাজনৈতিক ও সরকারি বেসরকারি দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ একসঙ্গে কাস্তে হাতে ধান কেটে উৎসবের শুরু করবেন।
চেয়ারম্যান শাহিনের বাড়িতে প্রতিবছর উৎসবের আয়োজন করা হয়। পরে এ উপলক্ষে নতুন চালের তৈরি বাহারি রকমের গ্রামীণ পিঠা পায়েস তৈরি করে গ্রামবাসীসহ আমন্ত্রিত সকলের সামনে পরিবেশন করেন বাড়ির নারী-পুরুষরা। চেয়ারম্যান শাহিন বাংলানিউজে জানান, ‘এই হেমন্তে কাটা হবে ধান, আবার শূন্য গোলায় ডাকবে ফসলের বান-পৌষপার্বণে প্রাণ-কোলাহলে ভরবে গ্রামের নীরব শ্মশান’ শ্লোগানে নবান্ন উৎসব-১৪২৪ শুরু হবে।
এদিন সকলের প্রাণবন্ত গল্প-আড্ডা, গান আর নানারকম সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়েছে। এই উৎসব আনন্দে সরকারি সকল দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী থেকে শুরু করে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষ অংশ নেবেন জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
বিএস