পরিশ্রম, সততা আর ইচ্ছাশক্তি যেকোনো মানুষকে যে সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার ট্যাক্সেরহাট বালাপাড়া এলাকার বাবলুর রহমান বাবু।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে আরও জানা গেছে, এইচএসসি পাসের পর লেখাপড়ায় মন বসেনি বাবুর।
একদিন বাবু তাদের আবাদি জমির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় লক্ষ্য করলেন, সবজিক্ষেতে বিষ প্রয়োগ করছেন কৃষকরা। বিষয়টি তার ভালো না লাগায় মনে মনে স্থির করলেন, বিষমুক্ত সবজি ও একই জমিতে একাধিক ফসলের চাষ করবেন।
এভাবেই শুরু। এরপর বাবুকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। চলতি মৌসুমেও সামান্য জমিতে মাত্র ৪ হাজার টাকা ব্যয়ে শীতের আগাম জাতের বাঁধাকপি ও ফুলকপি আবাদ করে বিক্রি করেছেন প্রায় ৫০ হাজার টাকার।
বদরগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে পশ্চিমে ৫ কিমি দূরের ট্যাক্সেরহাট বালাপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পরম যত্নে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক বাবলুর রহমান বাবু।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এক সময় আমাকে নিয়ে বাবা-মায়ের টেনশনের অন্ত ছিল না। অনেক ত্যাগ আর শ্রম দিয়ে গড়ে তুলেছি বিষমুক্ত সবজির খামার। কিছুদিন আগেও সামান্য জমিতে উৎপাদিত বিষমুক্ত কপি বিক্রি করে অনেক টাকা আয় করেছি। জমিতে এখনও সারি ধরে আছে আগাম জাতের বিষমুক্ত টমেটো, পটল, মরিচ, বেগুন ও বাঁধাকপি। জমির সীমানা ঘেঁষে আরও রোপণ করেছি বরবটি। সেগুলোও কয়েকদিনের মধ্যে বাজারে আসবে’।
‘আশা করছি, এগুলো থেকেই কয়েক লাখ টাকা আয় করতে পারবো’।
সফল ও স্বাবলম্বী চাষি বাবুর আশাবাদ, ‘আমি চাই, আমার মতো বেকার যুবকেরা অহেতুক সময় নষ্ট না করে নিজ নিজ কাজে মনোনিবেশ করবেন, তাহলে তারা সফল হবেনই’।
বদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবর রহমান বলেন, ‘একই জমিতে একাধিক সবজির চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বাবু। তার সাফল্য কামনা করি’।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কনক রায় বলেন, ‘দ্রুতই বিষমুক্ত সবজির বাগানটি দেখতে যাবো’।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭
এএসআর