খাদ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ কথা জানা গেছে। তারা বলছেন, অধিদফতর ৬২টি জেলার ২১৪টি উপজেলায় সরকারি গুদামগুলো সংস্কার করবে।
এ সংক্রান্ত প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৫৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা। চলতি ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বের অন্যতম জনবহুল ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ। সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যা নিয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে এ দেশ। দেশের এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য সরবরাহ ও তাদের পুষ্টি নিশ্চিত করা সরকারের লক্ষ্য।
এ উদ্দেশ্যে সরকার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সংগ্রহের আওতায় ধান, চাল ও গম সংগ্রহ করে। আর এসব খাবার মজুদ করতে খাদ্য বিভাগের অধীনে রয়েছে সাতটি সাইলো, ১২টি সিএসডি (সেন্ট্রাল সাপ্লাই ডিপো) এবং ৬৩২টি এলএসডি (লোকাল সাপ্লাই ডিপো)। সব মিলিয়ে গুদামগুলোতে খাদ্য মজুদের ধারণক্ষমতা ২১ লাখ মেট্রিক টন। এই ধারণক্ষমতা যেন ৩০ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করা যায়, সরকার সে লক্ষ্যে প্রকল্পটি নিয়েছে।
এ বিষয়ে খাদ্য অধিদফতরের পরিচালক জোয়ারদার আশরাফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশে অনেক খাদ্যগুদাম পুরনো হয়ে গেছে, যেগুলোর সিমেন্টের প্লাস্টার উঠে গেছে। কিছু খাদ্যগুদাম অচল রয়েছে। এসব বিষয় ছাড়াও খাদ্য মজুদ বাড়াতে দেশব্যাপী গুদামগুলোর সংস্কার প্রয়োজন। সরকার এ লক্ষ্যে কাজ হাতে নিয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, মূলত ছয়টি লক্ষ্যকে সামনে রেখে গুদামগুলোর সংস্কার করা হচ্ছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে খাদ্যশস্যের সংরক্ষণ, টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা এবং খাদ্য অধিদফতরের স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এছাড়া খাদ্য ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ, সাধারণ মানুষের কাছে খাদ্যশস্য যথাসময়ে পৌঁছে দেওয়া এবং খাদ্যশস্য সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থা প্রবর্তনের দিকেও নজর থাকছে।
প্রকল্পের আওতায় গুদামের রাস্তা, অফিস ও বাসাবাড়ি মেরামতও করা হবে। ১৯টি বাসা, অফিস ও একটি রেস্ট হাউজ নতুন করে নির্মাণ ছাড়াও নিরাপত্তায় সীমানা প্রাচীর ও অভ্যান্তরীণ রাস্তা তৈরি করা হবে।
কর্মকর্তারা মনে করছেন, গুদামগুলো মেরামত ও সংস্কার করা হলে স্বল্প খরচে গুদামের ধারণক্ষমতা বাড়বে। এতে একদিকে গুদাম ভাড়া দিয়ে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো সম্ভব হবে। অন্যদিকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণ, কার্যকর ও নির্ভরযোগ্যতা বাড়বে। এছাড়া বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাসের সময় দেশের উপকূলবর্তী জনগণের জন্য খাদ্য সহায়তা দেওয়া সহজতর হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৮
এমআইএস/এমএফআই/এইচএ/