ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

আউশ চাষে কৃষকদের ৩৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার প্রণোদনা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৮
আউশ চাষে কৃষকদের ৩৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার প্রণোদনা সংবাদ সম্মেলন করছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: চলতি বছর আউশ ধান চাষের জন্য দুই লাখ ৩৭ হাজার ১৮২ কৃষককে ৩৯ কোটি ৬২ লাখ ৮৩ হাজার ২৪৫ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
 

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার এবং কৃষি উন্নয়ন সহায়তা প্রদান এ কার্যক্রমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে।

দুই লাখ ৩৭ হাজার ১৮২ বিঘা জমিতে চাষের জন্য কৃষকরা এই প্রণোদনা পাবেন।
 
২০১৭-১৮ অর্থবছরে খরিফ-১ মৌসুমে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৬৪ জেলায় উফশী আউশের জন্য ৩২ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ১৭০ টাকা এবং ৪০ জেলায় নেরিকা আউশের জন্য সাত কোটি ২০ লাখ ৩০ হাজার ৭৫ টাকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে চলতি বছর এ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।
 
কৃষিমন্ত্রী জানান, উফশী আউশ ধানের ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক এক বিঘা জমির জন্য ৫ কেজি ধান বীজ, ২০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার সহায়তা পাবে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৫৯৭ টাকা ৫০ পয়সা। আর নেরিকা আউশ ধান ফসলের ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক এক বিঘা জমির জন্য একই পরিমাণ বীজ, সারের পাশাপাশি সেচ খরচ সহায়তায় ৫০০ টাকা ও আগাছা দমনের জন্য আরও ৫০০ টাকা পাবেন। এতে ব্যয় দাঁড়াবে দুই হাজার ১১৫ টাকা। উফশী আউশে চাষির সংখ্যা দুই লাখ দুই হাজার ৪১২ জন এবং নেরিকা আউশে চাষির সংখ্যা ৩৪ হাজার ৭৭০ জন।
 
কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রণোদনার ফলে ৮২ হাজার ৫৭৪ মেট্রিকটন চাল ও এক লাখ ২৪ হাজার ৬৯৯ মেট্রিকটন খড় উৎপাদন হবে। এতে আয় হবে ৩৪২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি এক টাকা খরচ করে আয় হবে ৮ টাকা ৬৫ পয়সা।
 
আউশে কোনো সময় প্রণোদনা ছিল না উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আউশ চাষে কৃষকদের উৎসাহিতকরণ, চাষের এলাকা ও ফলন বৃদ্ধি, পতিত জমি আবাদের আওতায় আনতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে প্রণোদনা দেওয়া শুরু করে। এ পর্যন্ত ৫৮৯ কোটি ২৪ লাখ ৮৪ হাজার ৪৬২ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।  
 
প্রণোদনা প্রদানের জন্য এই মুহূর্ত থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।
 
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপির একজন প্রতিনিধি এবং অধিদফতরের প্রতিনিধি কমিটি এ কৃষকদের তালিকা নির্ধারণ করে দেবে।
 
কৃষিসচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ বলেন, এখনও বোরো ধান লাগানো শেষ হয়নি। বোরো কাটার সঙ্গে সঙ্গে যেন প্রণোদনা পায়, সেজন্য আগেই কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। মার্চের শেষের দিক থেকে প্রণাদনা দেওয়া শুরু হবে, যেন কৃষকের সময়ের কোনো অপচয় না হয়।  
 
গত বছর হাওরের পাহাড়ি ঢলের কারণে প্রায় ১০-১১ লাক মেট্রিকটন চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে কৃষিসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা গত বছর আউশে বিশেষ যত্ন নেওয়ার কারণে এবার ২৭ লাখ মেট্রিকটন উৎপাদন হয়েছে, গত বছর ছিল ২২ লাখ মেট্রিকটন। আমনের সময়ও টার্গেটের চেয়ে দুই লাখ মেট্রিকটন বেশি উৎপাদন করেছি। সব মিলিয়ে পাঁচ লাখ মেট্রিকটন পুষিয়ে দিতে পেরেছি।
 
কৃষিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য বাইরে থেকে এসেছে মাত্র তিন হাজার ৮০০ মেট্রিকটন চাল। এই মানুষগুলোকে আমাদের খাদ্য ঝুড়ি থেকে সরবরাহ করেছি। আর যে আমদানি হয়েছে তার তিনভাগের দুই ভাগই গম।
 
তিনি বলেন, সাধারণ ক্যান্টিনে ১০ টাকায় দুধ চা, ২৬ টাকা কফি। সবাই কিনছে। একমাত্র কৃষক, আমাদের দেশে চ্যারিটেবল ডিসপেনসারি খুলেছেন মনে হয়, তারা নিজেরা লস দিয়ে আমাদের কাছে চাল সস্তায় বিক্রি করছেন। এটা আমার মনে হয় কৃষকের সঙ্গে জুলুম করছি। এই জায়গাটায় কৃষক কিছু পায়নি।
 
চালের ভোক্তা বেড়ে গেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পাঙ্গাস মাছকে চাল খাওয়ান, এইবার কোরবানির ঈদে দেখছি গরু চাল খাচ্ছে, আপনারা ছাপিয়েছেন। গার্মেন্টেসের মাড় চাল থেকেই করা হয়। ২৬ টাকায় এক কাপ কফি সচিবালয়ের ক্যান্টিন থেকে খেতে পারেন, তাহলে কৃষক আপনাদের কাছ থেকে তো একটু দাম আশা করতেই পারে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৮/আপডেট ১৪৩৯ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।