ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

হাওরে ধান কাটায় ধীর গতি, আতঙ্ক বজ্রপাত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৪ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৮
হাওরে ধান কাটায় ধীর গতি, আতঙ্ক বজ্রপাত ধান পাকলেও কাটা সম্ভব হয়নি এখনও।

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জে এবার ফলন ভালো হলেও শ্রমিক সংকট, ভারী বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাতের কারণে ধান কাটায় দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।

জেলার বিভিন্ন হাওরজুড়ে পাকা ধান থাকলেও শ্রমিকের অভাবে সেই ধান ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা।  

এদিকে দুই/তিনদিন ধরে থেমে থেমে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে।

ফলে বেশি টাকা দিয়ে শ্রমিক পেলেও বৃষ্টির মধ্যে ধান কাটতে চাচ্ছেন না তারা।

কাল বৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে বজ্রপাত আতংক। এখন প্রায় প্রতিদিনই শোনা যাচ্ছে, হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে হতাহতের খবর।

এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন হাওর অঞ্চলের গৃহস্থরা। তারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন যে তাদের সোনার ধানের কী হবে।  বিগত দুই/তিন বার ধান না পেলেও এবার ধান পাওয়ার পরও কাটতে না পেরে হতাশা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

বৃষ্টির সঙ্গে যদি আবার ব্যাপক শিলা পড়ে, তাহলে সব পাকা ধান ঝরে মাটিতে পড়ে যাবে। সেই ধান আর সংগ্রহ করা সম্ভব হবে না। এতে করে ধান চাষ করে লাভ তো দূরে থাক, উল্টো আরোও ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষক পরিবারগুলো।

আর এভাবে চলতে থাকলে কৃষক পরিবারগুলো ধান চাষে অনাগ্রহী হয়ে উঠবে। যার প্রভাব পড়বে দেশের শস্য ভাণ্ডারে।

মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ধান কাটতে আপত্তি না থাকলেও বজ্রপাত আতঙ্কে কেউ মাঠে নামার সাহস পাচ্ছেন না। এ কারণে ধান কাটায় ধীর গতি দেখা দিয়েছে। বিগত কয়েকদিনের বজ্রপাতে সুনামগঞ্জে ১০ থেকে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ কারণে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শ্রমিকরা ধান কেটে স্তূপ করছেন।

এখন বৈশাখ মাসের ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও আগাম জাতের ধান ব্রি-২৮ এখনও পুরোপুরি কাটা শেষ হয়নি। কৃষকদের দাবি করছেন, এখনও ৫০ শতাংশ ধানও কাটা হয়নি হাওরের।

জামালগঞ্জ উপজেলার পাকনার হাওরের কৃষক কামাল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমার
হাওরের ১৪ কেদার জমি রয়েছে। এখনও পর্যন্ত অর্ধেক জমির ধানও কাটতে পারিনি।
আমাদের এখানে কয়েকদিন ধরে শ্রমিক সংকট ও বজ্রপাতের কারণের ধান কাটায় ধীর গতি দেখা দিয়েছে। দু’দিন আগেও আমাদের এখানে ধান কাটার সময় কামলা কান্ত তালুকদার নামে এক কৃষক মারা গেছেন। এ নিয়ে সবাই আতঙ্কে আছেন।

সদর উপজেলার দেখার হাওরের কৃষক আশকর আলী বাংলানিউজকে বলেন, ধান নিয়ে বড় বিপাকে আছি। এখন প্রচুর বজ্রপাত হয়, শ্রমিকরা ধান কাটতে চান না। বেশি মজুরি দিলেও তারা ধান কাটতে নামতে চান না। আবার বৃষ্টি হলে ধানের গোড়ায় পানি জমে থাকে। এতে ধান কাটতে গেলে চুলকায় বলে ধান কাটতে দেরি হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, জেলার ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটায় ধীর গতি থাকলেও কৃষকরা সব ধান ঘরে তুলতে পারবেন। কিছু কিছু জায়গায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটা হচ্ছে। তাতে দ্রুত ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে।  

বাংলাদেশ   সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৮
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।