বৃহস্পতিবার (১০ মে) রাত সোয়া ৯টা থেকে আধা ঘণ্টাব্যাপী চলা ঝড়ে তিন উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমির উঠতি বোরো ধান, ভুট্টা, বাদাম ও মরিচ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসময় অসংখ্য ঘরবাড়ি ও গাছপালা উপড়ে পড়ে।
কালবৈশাখী ঝড়ে জমির উঠতি বোরো ধান সম্পূর্ণ নস্ট হওয়ার দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে শুক্রবার (১১ মে) জ্যোতিন্দ্রনাথ রায় (৬৫) এক কৃষক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাতজান গ্রামে এ ঘটানা ঘটে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, জেলার ডোমার উপজেলার ৯টি, ডিমলা উপজেলার তিনটি ও জলঢাকা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক এক হিসাবে কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় ১৭ হাজার ৭০৫ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে ১২ হাজার ৩৬ হেক্টর জমির ফসল। এরমধ্যে উঠতি বোরো ধান ৯ হাজার ২৯৮ হেক্টর, আউশ ধান ৯১ হেক্টর, পাট এক হাজার ৮৩৬ হেক্টর, বাদাম ১২০ হেক্টর, ভুট্টা ৪৭৮ হেক্টর, শাক-সবজি ২১৭ হেক্টর, মরিচ ২৩ হেক্টর ও মুগ ডাল ৩ হেক্টর।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহিম বাংরানিউজকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোসহ নিহতদের বাড়িতে গিয়ে তাদের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। নিহত পরিবার প্রতি প্রাথমিকভাবে ১৫ হাজার করে টাকা ও ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারগুলোর তালিকা ও ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় হলে সরকারিভাবে সাহায্য দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুন নাহার বাংলানিউজকে বলেন, কালবৈশাখীর ঝড়ে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। ৮০ শাতাংশ কৃষি বিনষ্ট হয়ে গেছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। জমি থেকে ধান ঘরে তোলার সময় কালবৈশাখী ঝড় সব কিছু তছনছ করে দিয়েছে।
নীলফামারী-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে উঠতি বোরো ধানের ক্ষতি এলাকার কৃষকদের কোমর ভেঙে দিয়েছে।
কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তিনি সরকারিভাবে চেষ্টা করবেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৮
জিপি