কুষ্টিয়ার জগতিতে ২২১.৪৬ একর জায়গা নিয়ে ১৯৬৫-৬৬ সালে পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরুর মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে কুষ্টিয়া সুগারমিল। ১০ হাজার মেট্রিকটন উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে ১৯৬৬-৬৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করে মিলটি।
কুষ্টিয়া সুগারমিলের দেওয়া তথ্যমতে, ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে ৬২৭৯১.৬৬ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে ৩৭৬৩.৬৬ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন করা হয়। সে মৌসুমে মিলের লোকসান হয় ৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এর পর বাণিজ্যিকভাবে ১৯৬৬-৬৭ সালে ১৪৩৯২৮.৬৩ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে প্রতিষ্ঠানটি লাভ করে ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। আশার আলো নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও পরে ১৯৬৭-৬৮ মৌসুম থেকে শুরু করে টানা ১৯৭১-৭২ মৌসুমে লোকসান করে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ১৯৭২-৭৩ মৌসুমে কোনো উৎপাদন হয়নি কুষ্টিয়া সুগারমিলে। সেবছর লোকসান হয় ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
মুক্তিযুদ্ধের পরেই আবার ঘুরে দাঁড়ায় মিলটি। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে ৭৬ লাখ ৯৯ হাজার এবং ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে লাভ করে ৪৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা। সবর্শেষ একটানা ৫ বছর লাভ করে ১৯৮০-৮১ মৌসুম থেকে ১৯৮৪-৮৫ মৌসুম পর্যন্ত লাভ হয় ১৬ কোটি ৮২ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
১৯৯০-৯১ মৌসুম থেকে ৪ বছর লোকসান করে ১৩ কোটি ৫১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে ২ কোটি ৬ লাখ ২২ হাজার টাকা এবং ১৯৯৫-৯৬ সালে ১ কোটি ২৬ লাখ ১৭ হাজার টাকা লাভ করে।
তার পর আবারো শুরু হয় লোকসানের পালা। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুম থেকে শুরু করে টানা ২০০৪-০৫ মৌসুম পর্যন্ত লোকসান করে ৪৬ কোটি ৪৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। পরে আবারো ঘুরে দাঁড়ায় কুষ্টিয়া সুগারমিল। ২০০৫-০৬ মৌসুমে লাভ করে ৯৩ লাখ ৮ হাজার টাকা।
এর পর থেকে আর লাভের মুখ দেখেনি এ প্রতিষ্ঠান। ২০০৬-০৭ মৌসুম থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় ৩৪৫ কোটি ৯৪ লাখ ৮২ হাজার লোকসান করে।
সর্বশেষ ২০১৭-২০১৮ মৌসুমেই ৪২১৩৭.৬৩০ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে ১ হাজার ৮৫৯ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন করে। এতে মিলের লোকসান হয় ৫৬ কোটি ২১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
কুষ্টিয়া সুগারমিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল কাদের বাংলানিউজকে জানান, ভরা মৌসুমে চিনির কাঁচামাল আখের যোগান কম থাকায় উৎপাদন কম হচ্ছে। তাই প্রতিবছর লোকসান গুণতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, ২৪ মে, ২০১৮
আরএ