ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

আউশ মৌসুমে সুগন্ধী ধানের বাম্পার ফলন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৪ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০১৮
আউশ মৌসুমে সুগন্ধী ধানের বাম্পার ফলন সুগন্ধী ধানের বাম্পার ফলন। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: বাগেরহাটে আউশ মৌসুমে সুগন্ধী জাতের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ মৌসুমে আউশের পরিবর্তে অর্গানিক পদ্ধতিতে সুগন্ধী জাতের ধানের ভালো ফলন হওয়ায় খুশি চাষি ও কৃষি বিভাগ।

হারিয়ে যাওয়া আউশের মৌসুমে ব্যাপকভাবে এ ধানের চাষ করার চিন্তা করছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগও চায় এই সুগন্ধী জাতের ধান ছড়িয়ে পড়ুক সারাদেশে।

এ অঞ্চলে এক সময় এ মৌসুমে ব্যাপক আউশ ধানের চাষ হতো। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আউশের ফলন কমে যাওয়ায় কৃষকরা আউশ ধান চাষ বন্ধ করে দেয়।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার দড়িচরমালিপাটন এলাকায় আউশ ধানের এ মৌসুমে গ্রিন বাগেরহাট অর্গানিক অ্যাগ্রো লিমিটেড সুগন্ধী জাতের ধান চাষের উদ্যোগ নেয়। কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী চলতি বছরের মার্চে ৪ বিঘা জমিতে সুগন্ধী জাতের ধান রোপন করে। চার মাসে ৩৩ শতাংশে বিঘা প্রতি জমিতে ১৫ থেকে ১৬ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। ধানের ভালো ফলন হওয়ায় খুশি চাষিরাও।

কৃষক মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আগে কখনও এ ধানের চাষ করিনি। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর কথা শুনে এ সুগন্ধী ধানের চাষ করেছি। এ ধানের ফলন খুবই ভালো। আর এই ফলন দেখে আমরা চিন্তা করছি আগামীতে জমির পরিমাণ বাড়াবো। আশ-পাশের চাষিদের উদ্বুদ্ধ করব। ’
সুগন্ধী ধানের বাম্পার ফলন।  ছবি: বাংলানিউজ
গ্রিন বাগেরহাট অর্গানিক অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী আকবর মিন্টু বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্বুদ্ধ হয়ে আউশ মৌসুমে আউশের পরিবর্তে নতুন ধানের সন্ধান করতে থাকি। পরে রাজশাহী থেকে সুগন্ধি জাতের ধানের বীজ সংগ্রহ করে অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করি। কোনো রাসায়নিক সার ছাড়াই একমাত্র জৈব সারের ব্যবহারে জমিতে যে ফলন হয়েছে, তাতে আমরা খুবই খুশি। ভবিষ্যতে এ সুগন্ধি জাতের ধান চাষ বৃদ্ধি করা হবে। এলাকার কৃষকরা যেন এ ধানের চাষ করে, তার জন্য বীজ সরবরাহ করার ব্যবস্থা করা হবে। ’

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ওবায়দুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আউশ ধান বিলুপ্তির পথে। ফলন কমে যাওয়ায় এ সুন্দর সুস্বাদু ধান হারিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা লাভবান হচ্ছে না। আমরা এটাকে মেকাপ করার উদ্যোগ নিয়েছি। হাইবেলু টপ অ্যারোমেটিক রাইসটাকে (সুগন্ধি ধান) আউশ মৌসুমে উৎপাদন করে চাষিদের জন্য যদি লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে আমাদের ঐতিহ্যবাহী ধান আউশ মৌসুমটা আবারাও ফিরে আসবে। আমরা এক বছর গবেষণা চালিয়ে সফলতা পেয়েছি। ’

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আউশ মৌসুম চাষিদের কাছে অবহেলিত বিভিন্ন কারণে। মনে হয় এভাবে নতুন জাতের আবাদের প্রচার হলে চাষিদের আগ্রহ বাড়বে। সারাদেশে আউশ ফসলের ব্যাপক সাড়া জাগবে। আমরাও চেষ্টা করব চাষিদের মাধ্যমে সুগন্ধী জাতের ধান সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।