ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

কৃষিতে লোকসান, হাঁসে হাসি খামারিদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৮
কৃষিতে লোকসান, হাঁসে হাসি খামারিদের হাঁসের খামারে দাঁড়িয়ে আছেন সামছুল আলম, ছবি: বাংলানিউজ

হবিগঞ্জ: ‘ভাটি অঞ্চলের রাজধানী’ হিসেবে খ্যাত দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা। এখানকার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষের পেশা কৃষি। তবে বিগত দিনগুলোতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও ধানের প্রকৃত মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়েছেন অধিকাংশ কৃষক। কৃষির লোকসান কাটিয়ে ওঠতে এখানকার কৃষকরা ঝুঁকছেন হাঁসের খামারের দিকে। ইতোমধ্যে অসংখ্য তরুণ কৃষক হাঁসের খামার করে দেখেছেন সফলতার মুখ।

বিশেষ করে বৈশাখের শেষে হাওরে উচ্ছিষ্ট ধানসহ হাঁসের প্রয়োজনীয় প্রচুর পরিমাণ খাবার থাকে। যে কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণে ডিম দেয় হাঁস।

ফলে কৃষিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা হাঁসের খামারে স্বাবলম্বী।

উপজেলার পিরিজপুর ও বদলপুর গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত দুই বছরে আগাম বন্যা, শিলাবৃষ্টি এবং ধানের প্রকৃত মূল্য না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে কৃষি জমি চাষ করে প্রায় পথে বসেছিলেন তারা। কোনো উপায় না পেয়ে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে হাঁসের খামার করছেন অধিকাংশ কৃষক।

পিরিজপুর গ্রামের তরুণ কৃষক সামছুল আলম বাংলানিউজকে জানান, গত বোরো মৌসুমে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ করে ৩৫ একর জমি চাষ করেছেন তিনি। ধান পেয়েছিলেন প্রায় দেড় লাখ টাকার। তার ৫০ হাজার লোকসান হয়। পরে তার বাবার পরামর্শে আরেক তরুণ কৃষক রাজ মিয়াকে সঙ্গে  নিয়ে তিনি ১ হাজার ৪শ’ হাঁস দিয়ে হাঁসের খামার দেন। প্রতি একশ’ হাসের মূল্য ছিল ৩০ হাজার।

তিনি আরও জানান, বৈশাখের শেষে হাওরে উচ্ছিষ্ট ধানসহ হাঁসের প্রয়োজনীয় প্রচুর পরিমাণ খাবার থাকে। ওই সময় প্রতিদিন ৮শ’ হাঁস ডিম দেয়। স্থানীয় ডিম ব্যবসায়ীর কাছে ৫শ’ টাকা হারে প্রতি একশ’ ডিম বিক্রি করেন। সেই হিসাবে তাদের প্রতিদিন আয় হয় ৪ হাজার টাকা। হাঁসগুলো তিনমাস এভাবে ডিম দেবে বলে আশাবাদী সামছুল। এতে তাদের হাঁসের মূল্য ওঠে যাবে।

হাঁসের খামারি মানিক মিয়া, সেজাবুর মিয়া ও আশরাফুলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারাও একইভাবে লাভবান হয়েছেন। ভবিষ্যতে তারা কৃষি কাজ ছেড়ে দিয়ে পুরোদমে হাঁসের খামার করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ইসহাক বলেন, হবিগঞ্জ জেলায় ৫ শতাধিক হাঁসের খামার রয়েছে। এর মধ্যে আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, লাখাই ও নবীগঞ্জে বেশি। হাঁস পালনে এখানকার খামারিদের মুখে হাসি ফুটেছে।

তিনি আরও বলেন, হাঁসের খামারি একজন যুবক সহজেই নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে কোনোভাবেই হাঁস 'ডাক প্লেগ' রোগে আক্রান্ত না হয়। এ রোগ থেকে মুক্ত রাখতে হাঁসের বাচ্চাকে চার সপ্তাহ বা ২৮ দিন পূর্ণ হলেই ভ্যাকসিন টিকা দিতে হবে। যা প্রতি ১শ’ হাঁসের ভ্যাকসিনের মূল্য ৩০ টাকা (সরকারি নির্ধারিত)। এছাড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে খামারিকে সব ধরণের পরামর্শ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৮
ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।