ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

মাল্টা চাষে লাভবান হবেন চাষীরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৮
মাল্টা চাষে লাভবান হবেন চাষীরা বিজয়নগরে একটি বাগানের গাছে মাল্টা ধরে আছে। ছবি: বাংলানিউজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: সারিবদ্ধ গাছে গাছে ঝুলছে মাল্টা। প্রতিটি গাছে এতোবেশি মাল্টা ধরেছে যে ফলের ভারে গাছের ডালগুলো মাটির দিকে নুয়ে পড়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃষি নির্ভর উপজেলা বিজয়নগরে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। এখানকার অধিকাংশ মানুষের জীবিকা কৃষি কাজের ওপর নিভর্রশীল।

অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বছর দুই ধরে এখানে চাষ হচ্ছে মাল্টা। অল্প টাকা আর শ্রমে বেশি লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকায় এই ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে উপজেলার বিষ্ণুপুর, সিঙ্গারবিল, পাহাড়পুর, হরষপুর, পত্তনসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ৫০ হেক্টর জমিতে ৬২টি বাগানে মাল্টা চাষ শুরু হয়েছে। সাইট্রাস ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট থেকে এখানকার কৃষকদের বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে গাছের চারা, সার, কীটনাশক এবং ওষুধ। চাষ শুরুর কয়েক মাস আগে থেকে মাল্টা চাষের ওপরের ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। বিজয়নগরের একটি মাল্টা বাগান।  ছবি: বাংলানিউজকথা হয় মাল্টা চাষি নিয়াজ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি ৩০ শতাংশ জায়গায় ২৫০টি মাল্টা গাছ রোপণ করেছি। আগে মূলত এখানে আনারস, কাঁঠাল গাছ এবং বাঁশ বাগান ছিল। এগুলোতে বেশি লাভ না হওয়ায় দুই বছর ধরে মাল্টা চাষ করছি। প্রথমবার গাছে ভালো ফলন হয়েছে। এর আগে কোনো গাছে এতো ভালো ফলন হয়নি। আশা করছি, এবারও ভালো ফলন হবে আর মাল্টা বিক্রি করে লাভবান হবো।

আলম হোসেন নামে আরেক মাল্টা চাষি বাংলানিউজকে বলেন, আগে ধান চাষ করতাম। আমার জমির পাশের জমিতে একজনকে দেখলাম মাল্টা বাগান করেছেন। সেটা দেখে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে আমার জমিতেও মাল্টা চাষ শুরু করেছি। ফলের দিক দিয়ে মাল্টা লাভজনক ফল।

মাল্টার পরিচর্যার বিষয়ে তিনি বলেন, মাল্টা গাছের চারপাশের আগাছা পরিষ্কার করলে এবং পোকার আক্রমণ দেখলে কীটনাশক স্প্রে করলেই গাছ সতেজ থাকে। আর শুষ্ক মৌসুমে গাছে সেচ দিতে হয়।

মাল্টা চাষি মোহাম্মদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, দুই বছর আগে কৃষি কার্যালয়ের পরামর্শে মাল্টা চাষ শুরু করেছি। দুই বছর পর এবার প্রথম ফল ধরেছে। প্রতিটি গাছে ১০০/১৫০টি মাল্টা ধরেছে। আশা রাখি, একেকটি গাছ থেকে ১৫০০ হাজার মাল্টা বিক্রি করতে পারবো।

তিনি বলেন, মাল্টা চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আর বিক্রি করতে পারবো ৩০/৩৫ হাজার টাকার মতো। মাল্টা বাগানে সপ্তাহে তিন থেকে চার ঘণ্টা শ্রম দিলেই চলে। মাঝে মধ্যে লাল সার, গুটি সার এবং কিছু কীটনাশক দিতে হয়। মাল্টা বাগান পরিচর্যা করছেন একজন কৃষক।  ছবি: বাংলানিউজ মাল্টা চাষের ব্যাপারে কথা হয় বিজয়নগর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলমের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাইট্রাস ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প থেকে ২০১৫ সাল থেকে সাইট্রাস জাতীয় ফল লেবু,  কমলা ও মাল্টা চাষ শুরু হয়। আমাদের উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে এসব চারা, সার, কীটনাশক, স্প্রে মেশিন বিনামূল্যে কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। আমরা এর আগে কৃষকদের ট্রেনিংও দিয়েছি। এ বছর মাল্টার ভালো ফলন হয়েছে। আমরা আশা করছি, প্রতিটি বাগান থেকে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মাল্টা বিক্রি করা যাবে। তাতে লাভবানও হবেন চাষিরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, জুলাই ৩০,  ২০১৮
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।