সাদার ওপর কুচকুচে কালো ছোপ ছোপওয়ালা লাল্টু ও বল্টুকে নিয়ে কথা হচ্ছে পুরো জেলায়। উৎসুক লোকজন লাল্টু-বল্টুকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় করছেন খামারি মো. মুনজুরুল আলমের বাড়িতে।
বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে জেলার চিতলমারী উপজেলার হিজলা গ্রামে লাল্টু-বল্টুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় অর্ধশতাধিক লোক অপেক্ষা করছেন লাল্টু-বল্টুকে দেখার জন্য।
সংবাদকর্মী পরিচয় দিলে খামারি মুনজুর ও তার চার সহযোগী লাল্টু-বল্টুকে গোয়াল ঘরের বাইরে বের করেন। নাদুস-নুদুস গরু দু’টির গায়ে কালো-সাদা ছোপ ছোপ। একবার দেখলে চোখ ফেরানো দায়।
খামার মালিক মো. মুনজুরুল বলেন, ২০১৩ সালে সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট পদ থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। তারপর বাড়িতে এসে বগুড়া থেকে ছয়টি গাভী সংগ্রহ করে শুরু করি গরুর খামার। ২০১৪ সালের শেষের দিকে একটি গাভীতে হলিস্টিন ফিরিজিয়ান জাতের সিমেন (শুক্রাণু) দিয়ে প্রজনন করাই। ২০১৫ সালে ওই গাভীর জমজ দু’টি ষাঁড়ের জন্ম হয়। দেখতে একই রকম বাচ্চা দু’টিকে ঘিরে তৈরি হয় আমার স্বপ্ন। নাম রাখি লাল্টু ও বল্টু। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শে লাল্টু-বল্টুর যত্ন শুরু করি। সাড়ে তিন বছরে লাল্টু-বল্টুর ওজন ৩০ মণে পৌঁছেছে। এ বছর আমি লাল্টু-বল্টুকে বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছি। দাম চেয়েছি ২০ লাখ। এরপর থেকে অনেক ক্রেতা বাড়িতে আসছেন। ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলেছেন কয়েকজন। আশা করি, কোরবানির আগ মুহূর্তে দাম আরও বাড়বে।
তার দাবি, জন্মের পর থেকে আমার লাল্টু-বল্টুকে দেশীয় খাবার খাওয়ানো হয়েছে। ভুষি, কুড়া, খৈল, চালকুমড়া, কলা, লাউ ও দেশীয় বিভিন্ন মৌসুমী ফল খেয়ে বড় হয়েছে লাল্টু-বল্টু। লাল্টু-বল্টুকে মোটা তাজা করার জন্য কোনো কৃত্রিম খাবার খাওয়ানো হয়নি।
জেলার গরু ব্যবসায়ী ইমরান বলেন, লাল্টু-বল্টুর দাম বলেছি সাড়ে ১৩ লাখ টাকা। কোরবানির আগে আমি আরও একটু বাড়াবো। কপালে থাকলে গরু দু’টি আমি কিনে ব্যবসা করতে পারবো।
মো. জাকারিয়া হোসেন, দবির মুন্সি, ককিলা আক্তারসহ গরু দেখতে আসা অনেকে বলেন, গরু দু’টি দেখে আমাদের খুব ভালো লেগেছে। এর আগে গণমাধ্যমে দেখলেও এতো বড় গরু এবারই প্রথম দেখলাম বাগেরহাটে।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা (ডিএলও) ডা. মো. সাইফুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বাগেরহাট জেলার সবচেয়ে বড় গরু লাল্টু-বল্টু। আশা করছি, গরু দু’টি অনেক ভালো দামে বিক্রি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৮
এসআই