তিনি বাংলানিউজকে জানান, এমনিতে কৃষাণ পাওয়া যাওছে না, তার উপর পানি নাই। পাটা ধরি এখন মুই কি করো? পাটাগুল্যা শুকি গেল বাহে।
অপর কৃষক মামুনুর রশিদ (৪৫) বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় আমাদের মতো চাষিরা পাট নিয়ে খুব বিপাকে আছি। পানি না পেলে পাট জাগ দেবো কিভাবে ? বাধ্য হয়ে আমাদের এলাকার অনেক কৃষক এখন মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিয়ে কোনো রকমে পাট জাগ দিচ্ছেন। কষ্টের ফসল তো রক্ষা করতে হবে। সরেজমিনে গোটা উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রখর রোদে কৃষকরা পানিশুন্য নিচু জমিতে কোনো রকমে সেচ দিয়ে পানির ব্যবস্থা করে পাট জাগ দিয়েছেন, কেউ কেউ পাট জাগের ব্যবস্থা করছেন, কেউবা পুকুর সংলগ্ন জমিতে পানির ব্যবস্থা করে সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দিচ্ছেন আবার অনেক কৃষকই পাট জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে না পারায় পাট শুকিয়ে পাটকাঠিতে পরিণত হওয়ার চিত্রই চোখে পড়ে।
আরও দেখা যায়, কৃষকরা ইতোমধ্যে পাট জাগ দিয়েছেন তাদের বেশিরভাগই জাগ দিয়েছেন সনাতন পদ্ধতিতে। ফলশ্রুতিতে পুকুর নালা ডোবা কিংবা পুকুর সংলগ্ন জমির পরিবেশ দুগর্ন্ধ ও বিষাক্ত হয়ে যাওয়ায় পুকুর, নালা, ডোবা ও নিচু জমির দেশিয় প্রজাতির মাছ মারা যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ৫৬০হেক্টর। যা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনক রায় বাংলানিউজকে জানান, শুধুমাত্র পাট জাগ সমস্যার কারণে এ বছর পাটের আবাদ কম হয়েছে। রিবন রেটিং পদ্ধতি আমাদের উপজেলায় তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি, কারণ নির্ধারিত সময়ের একদিন পরেও যদি পাট জাগ দেওয়া হয় তাহলে পাটের আঁশ সঠিকভাবে ছাড়িয়ে নেওয়া যায় না। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়ায় পরিবেশ দূষিতও হয়।
তিনি জানান, পাটের বর্তমান বাজার মূল্য সাত থেকে আটশ টাকা। যদি পাটের দাম ১৫শ থেকে ১৮শ টাকা মণ হতো তাহলে কৃষকরা পাট চাষ করে লাভবান হতেন। বদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এ উপজেলার কৃষকরা দিন দিন পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। পাট জাগ সমস্যা, সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগের ফলে আঁশের গুনগত মান নিম্ন হওয়া, দাম কমে যাওয়া পাট চাষের অনাগ্রহের অন্যতম কারণ বলে তিনি মনে করেন। আগামীতে এ উপজেলায় পাট চাষ আরও কমে যাবে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
এএটি