বেশি লাভের আশায় শীতকালীন আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা। ক্ষেত পরিচর্যা, রোগ-বালাই দমন ও অধিক ফলনের আশায় দিন রাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছেন তারা।
শীতকালীন সবজি করলা, মূলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিম, লাউ, টমেটো, লালশাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হয়েছে এ এলাকাজুড়ে। নিরন্তর পরিশ্রম করছেন কৃষকরা। বেকার যুবকরা চাকরির দিকে না ঝুঁকে নেমে পড়েছেন সবজি চাষে। শীতকালীন সবজি অল্প দেখা গেলেও মাসখানেকের মধ্যে ভরপুর হয়ে উঠবে ঠাকুরগাঁওসহ এ অঞ্চলের বাজারগুলো। দামে কিছুটা বেশি হলেও ভোক্তারা স্বাদ নেবে এসব সবজির। এবার ভালো ফলন ও লাভবান হবে এমনটাই বলছেন তারা। স্থানীয় শ্রমিকরাও কাজের নিশ্চয়তা ও ন্যায্য মজুরি পাওয়ায় খুশি।
প্রতিদিন সকালে ঠাকুরগাঁও থেকে রানীগঞ্জ পর্যন্ত পাকা রাস্তায় কৃষকদের করলা বেচাকেনার ধুম পড়ে যায়। ভালো দাম পেয়ে তাদের মুখে হাসির ছোঁয়া।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গ্রামের সবজি চাষি নাসির বাংলানিউজকে জানান, এবার বাজারে সবজির ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় সবজির ফলনও অনেক বেশি। তবে শীতকালীন আগাম সবজি চাষের ঝুঁকিও থাকে অনেক বেশি।
রাজেকা ইউনিয়নের সবজি চাষি আশাদুল বাংলানিউজকে জানান, আগাম সবজি চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। আর বিক্রি হয় ৮০ থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। করলার দাম ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা মণ থাকলে লোকসান হওয়ার আশঙ্কা নেই।
রংপুর থেকে আসা ব্যাপারি সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতিদিনই ঠাকুরগাঁও থেকে তিন থেকে চার ট্রাক করে করলা কিনে নিয়ে আবার রাজধানীর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করি।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় সাত হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদন হবে এক লাখ ৫১ হাজার মেট্রিক টন শাকসবজি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আফতাব হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এ অঞ্চলের সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীর ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশগুলোতে যায়। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা কারিগরি সহায়তাসহ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে এমন আশা কৃষি বিভাগের।
ঠাকুরগাঁও সবজি সংরক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করাসহ সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পেলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ অঞ্চলের কৃষকরা ভূমিকা রাখবে এমন প্রত্যাশা সবার।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৮
জিপি