সরেজমিন দেখা যায়, রেগুলেটর দুটির মোট ২৮টি গেট আছে। মূল রেগুলেটরের ১৪ গেটের মধ্যে দুটি ছাড়া বাকি ১২টি বিকল হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে।
বোরো মৌসুমে লক্ষ্মীপুরের কৃষকরা মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির ওপর ভরসা করে আবাদ করেন। বিগত বছরগুলোর মৌসুমের এমন সময় পানির প্রয়োজন হলে রেগুলেটরের গেটগুলো খুলে দেওয়া হতো। মেঘনার জোয়ারের পানি রহমতখালী খাল হয়ে আশেপাশের বিভিন্ন খালে ঢুকতো। এসব পানি খালে খালে পৌঁছাত কৃষকের দ্বারপ্রান্তে। পর্যাপ্ত পানিপ্রাপ্তির পর গেট বন্ধ করে দেওয়া হতো। কিন্তু চলতি মৌসুমে রেগুলেটরের বেশিরভাগ গেট বন্ধ থাকায় পানি প্রবেশ করতে পারছে না; যে কারণে কৃষক এখন বিপাকে।
কমলনগর উপজেলার উত্তর চর লরেন্সের তোরাবঞ্জ এলাকা ও পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার ভবনীগঞ্জের চর উভুতি ঘুরে দেখা গেছে, খালে পানি নেই। বোরো রোপণ করতে পারছেন না বেশিরভাগ কৃষক। কেউ কেউ বিকল্প উপায়ে পুকুর-দীঘি থেকে পানি নিয়ে চারা রোপণের চেষ্টা করছেন।
কৃষকরা জানান, বোরো মৌসুমে অমাবশ্যা ও পূর্ণিমার আগে-পরে চার থেকে পাঁচদিন জোয়ার আসে। ওই জোয়ারের পানি খালে ঢুকলে সে পানি পাম্প দিয়ে ক্ষেতে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রায় সবগুলো গেট বন্ধ থাকায় পানি খালে পৌঁছায় না।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার টুমচর, কালির চর, চর উভুতি, ভবানীগঞ্জ, জকসিন, মিরিকপুর, উত্তর জয়পুর, দত্তপাড়া, তেওয়ারীগঞ্জ, কুশাখালীসহ জেলার পূর্বাঞ্চল এবং কমলনগর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের বেশিরভাগ কৃষক পানির অভাবে বোরো আবাদ করতে পারছেন না।
উত্তর লরেন্স কৃষি উন্নয়ন সমিতির সভাপতি ও সেচ মালিক আবদুল গণি জানান, পানি না পেয়ে কৃষকরা হতাশ। পানির অভাব না মিটলে কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়বেন।
মজুচৌধুরীরহাট রেগুলেটরের গেইট অপারেটর মো. ফয়েজ জানান, দুটি রেগুলেটরের ২৮টি গেটের মধ্যে ৫টি ভেঙে গেছে। বাকি ২৩টি গেটের ওঠা-নামার তার ছিঁড়ে গেছে; যে কারণে গেটগুলো খুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গেট খুলতে না পারায় ধান চাষে কৃষকরা পানি পাচ্ছে না। বিষয়টি কতৃপক্ষকে জানিয়েছি।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলাম বলেন, রেগুলেটরের গেট খুলতে না পারার বিষয়টি অবগত হয়েছি। মেরামতের জন্য লোকজন খবর দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে। বোরো আবাদে কৃষকদের পানির অভাব কাটবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৮
এসআর/এমজেএফ