জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ৪৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। এবার উৎপাদনে ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৮ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন।
আলু চাষিরা জানান, জমি থেকে আলু তুলতে শ্রমিকদের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হয়। এছাড়া জেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় স্থানীয় মধ্যস্বত্ব ভোগীদের কাছে আলু বিক্রয় করতে হয়। ফলে কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্ব ভোগী আলু ব্যবসায়ীরা।
দিনাজপুর সদর উপজেলার মাঝডাঙ্গা গ্রামের আলু চাষি মাহাতাব হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, হঠাৎ বাজারে আলুর দাম কমে যাওয়ায় তেমন লাভ হচ্ছে না। গত কয়েকদিন আগেও প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) আলু প্রকার ভেদে ২৮শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা বস্তা বিক্রি হয়েছে। এখন আলু বিক্রয় হচ্ছে ২ হাজার টাকা বস্তা।
একই এলাকার আলু চাষি দুলাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি, এখনো আলু তোলা শেষ হয়নি, সম্পূর্ণ আলু তোলার পর বোঝা যাবে লাভ ক্ষতি। অনেক আলু চাষি তাদের জমি থেকে সরাসরি মধ্যভোগী আলু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করায় তেমন একটা লাভ করতে পারচ্ছেন না।
আলু চাষি আইনুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এক বিঘা জমিতে ২০ বস্তা (৪০ মন) আলু উৎপাদন হয়। বিঘাপ্রতি খরচ হয় ২০ হাজার টাকার উপরে। আর ২০ বস্তা আলু বিক্রি হয় ৩০ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ৮/১০ হাজার টাকা লাভ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
শহরের বাহাদুর বাজারের মধ্যস্বত্ব ভোগী আলু ব্যবসায়ী মোমিনুল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কৃষকের জমি থেকে কম দামে আলু কিনে ভ্যানে করে নদীতে নিয়ে ধুয়ে বস্তায় ভরি তারপর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি। এখানে শ্রমিকদের খরচ দিয়েও মোটমুটি ভালোই লাভ হয়।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল বাংলানিউজকে জানান, এবার দিনাজপুরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও শৈত্যপ্রবাহ কম হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৃষকদের কাছে গিয়ে আলুর ফলন বৃদ্ধি করতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। আগামীতেও আলুর বেশি উৎপাদনের জন্য কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
এনটি