জানা যায়, তিনমাস ২৭ দিন আগে নাটোরের উত্তরবঙ্গ হাঁস প্রজননকেন্দ্র থেকে ৩০০টি একদিন বয়সী হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করেন টিটো। এরপর নিজেদের পুকুরের উপর মাচা ঘর তৈরি করে খামার গড়ে তোলেন তিনি।
রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ স্নাতকোত্তর খামারি আলফ্রেড টিটো বাংলানিউজকে বলেন, পৈতৃক একটি বড় পুকুর রয়েছে তার। প্রথমে ওই পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন তিনি। গত ছয় মাসে প্রায় এক লাখ টাকার মাছও বিক্রি করেছেন। কিন্তু তার লক্ষ্য বছরে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা আয় করা। এজন্য পুকুরের উপরে গড়ে তুলেছেন একটি হাঁসের খামার। পাশাপাশি গরুর খামারও করেছেন তিনি। ওই খামারে ১৫টি উন্নতজাতের গরু রয়েছে।
টিটো জানান, হাঁস খামারে ৩০০টি হাঁসের মধ্যে ছয়টি মাদা অর্থাৎ পুরুষ জাতের হাঁস। খাকি ক্যাম্পবেল জাতের হাঁসগুলো এরই মধ্যে ডিম দেওয়া শুরু করেছে। তাও আবার এক ডিমে দুই কুসুম। খামারটি পরিচর্যার জন্য একজন লোক সার্বক্ষণিক কাজ করেন। আর তিনি নিজেও খামারে সময় দেন।
২০১২ সালে স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেছেন টিটো। এরপর একের পর এক চাকরির জন্য ছুটেছেন বিভিন্ন জায়গায়, দিয়েছেন বেশ কয়েকবার ইন্টারভিউও। কিন্তু কোথাও চাকরি জোটেনি। এ অবস্থায় ওই পুকুরটি নিয়ে ভাবনা মাথায় আসে তার। প্রথমে সেখানে মাছ চাষ শুরু করেন। এরই মধ্যে এক লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। পরে গরু ও হাঁসের খামার শুরু করেন টিটো।
হাঁসের বিষ্ঠা হচ্ছে মাছের খাবার। আর গরুর গোবর দিয়ে বায়োপ্ল্যান্ট করার ইচ্ছে রয়েছে তার। এসব থেকে বছরে ১০ লাখ টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখছেন। এলাকার বেকার তরুণদের জন্যও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান আলফ্রেড টিটো।
খাতামধুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী তার বড় ভাই। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, টিটো খামার করে স্বাবলম্বী হোক এটা আমরা চাই। ঘুষ আর তদবির ছাড়া আজকাল চাকরি তেমন একটা হয় না। তাই টিটোকে খামার গড়ার জন্য উৎসাহ দিচ্ছি। এতে টিটোর দেখাদেখি এলাকার বেকার যুবকরাও নিজে নিজে কিছু করতে উৎসাহিত হবে।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আলফ্রেড টিটোর হাঁসের খামার সম্পর্কে আমরা জেনেছি। তিনি যে জাতের হাঁস লালন-পালন করছেন তা খুব লাভজনক। এসব হাঁস নিয়ম করেই ডিম দেয়।
এ খামারের পরিসর আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন ডা. এনামুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৯
জিপি