জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ২১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই শতাংশ জমিতে চাষ কম হয়েছে।
কৃষকেরা জানায়, অন্য বছর বিঘা প্রতি ২৫-২৭ মণ ফলন হলেও এ বছর বিঘা প্রতি ১৭-১৮ মণ ফলন হয়েছে। একদিকে যেমন ফলন কম অন্যদিকে দামও কম। বর্তমানে বাজারে মোটা ধান চার থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে বিঘা প্রতি ধান চাষ করতে ১২-১৩ হাজার টাকা খরচ হলেও ধান বিক্রি করে কৃষকের ঘরে আসছে ৭-৮ হাজার টাকা।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভমরদহ গ্রামের কৃষক কাওছার আলী বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর আমার প্রায় ১৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান রয়েছে। লাগানো থেকে কাটা পর্যন্ত ১৩/১৪ হাজার টাকা খরচ হলেও ধান বিক্রি করে পাচ্ছি ৭/৮ হাজার টাকা। বর্তমানে এখানকার বাজারে মোটা ধান (হাইব্রিড) মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
একই গ্রামের কৃষক মিলন হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, অন্যান্য বছরে এক বিঘা ধান চাষ করে যেখানে ধান পাওয়া যেতো ২৫/২৬ মণ সেখানে এ বছর উৎপাদন হচ্ছে ১৫/১৭ মণ। লেবার বাদ দিয়ে কৃষকের ঘরে আসছে মাত্র ১০/১২ মণ ধান।
তিনি আরও বলেন, জমি পাকানো বাবদ দেড় মণ, শ্যালো মালিককে সাড়ে তিন মণ, কাটার শ্রমিককে চার মণ ও মাড়াই মেশিনের মালিককে এক মণ হারে ধান দিয়ে মোট ১০ মণ ধান চলে যাচ্ছে কৃষকের বাইরে। একজন কৃষকের ঘরে আসছে মাত্র ১০ থেকে ১১ মণ ধান। কি নিয়ে বাঁচবে কৃষক।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (খামারবাড়ি) উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেছেন, ঝড় বৃষ্টির কারণে জেলায় যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তাতে ফলনের তারতম্য হবে না। ভাল ফলন হলে কৃষকের সেই ক্ষতি পুষিয়ে যাবে। তাছাড়া সরকারিভাবেই বোরো আবাদে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করা হয়ে থাকে। বোরো আবাদে কৃষকদের খরচের পরিমাণ বাড়ে। এক্ষেত্রে আউশ আমন আবাদে খরচ কম আবার উৎপাদন বেশি।
মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকন বাংলানিউজকে বলেন, কৃষি অফিস কৃষকদের মধ্যে উন্নতমানের বীজ ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে। আমাদের কৃষি পণ্য যেন লাভজনক হয় সেদিকে কাজ করছে বর্তমান সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৯
এনটি