ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

নবাবগঞ্জে বেগুনি ধানের ব্যাপক সাফল্য 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৯
নবাবগঞ্জে বেগুনি ধানের ব্যাপক সাফল্য  বেগুনি ধানের ক্ষেত। ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে পরীক্ষামূলকভাবে আবাদ করা বেগুনি ধানের ব্যাপক ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘায় ২৬ মণ ধান পেয়েছেন কৃষক আব্দুল হাকিম। তার সাফল্যে এই ধান চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন আশপাশের অনেক কৃষক। 

নবাবগঞ্জ উপজেলার পুটিমারা ইউনিয়নের চড়ারহাটের পশ্চিম পাশে বিরামপুর-ঘোড়াঘাট পাকা সড়কের উত্তরে নজর কাড়া বেগুনি রংয়ের যে ধান চাষ করা হয়েছিল তা কাটা হয়েছে। ওই ধানের ফলন হয়েছে বিঘা প্রতি প্রায় ২৬ মণ।


 
উপজেলা কৃষি অফিসার আবু রেজা মো. আসাদুজ্জামান ও বেগুনি ধান চাষ করা কৃষক আব্দুল হাকিম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ধানটি বাজারে নেয়ার পর এর মূল্য এবং চাহিদা কেমন হবে তা জানা যাবে।
 
উপজেলার পুটিমারা ইউনিয়নের দক্ষিণ জয়দেবপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে কৃষক আব্দুল হাকিম ওই বেগুনি রংয়ের ধান চলতি বোরো মৌসুমে চাষ করেছিলেন।  

আব্দুল হাকিম বাংলানিউজকে জানান, গত মৌসুমে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের দুলালী বেগম নামে এক নারীর এ ধান চাষ করার সংবাদ তিনি জানতে পারেন। পরে তার কৌতুহল জাগে ওই ধান চাষ করার। এরপর তিনি গাইবান্ধা থেকে ১৫০০ টাকায় ১ কেজি বীজ ধান ক্রয় করে নিয়ে এসে তার চারা তৈরি করেন। চারা তৈরির পর চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে জমিতে চারা রোপণ করেন।  

এ ধান চাষে তাকে নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগ পরামর্শসহ তদারকি করেছে। সড়কের ধারে হওয়ায় এবং রং বেগুনি দেখে ওই পথে যাতায়াতকারীদের নজর কাড়ে ক্ষেতটি। ধান গাছের গোছাগুলি উফশী জাতের মত এবং গোছার রং বেগুনি হলেও ধানের রং হয়েছে উফশির মত এবং ধানের গায়ে ফোটা ফোটা দাগ রয়েছে। চাল সুগন্ধিযুক্ত সাদা রংয়ের।  

কৃষক আবদুল হাকিম আরও জানান, তিনি ওই ধানটি পুনরায় চাষ করবেন এবং ধানটি বিস্তার ঘটানোর জন্য তার ফলিত ধানগুলি শুধু বীজ হিসেবেই বিক্রি করবেন। এখন ওই ধান চাষের কি রকম বিস্তার ঘটবে তা জানতে আগামী মৌসুম পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।  
নবাবগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ধানটিকে চিনে নিষিদ্ধ ধান বলা হয়ে থাকে। প্রাচীন চীনের রাজ পরিবারের মধ্যেই কেবল এ ধানের ব্যবহার সীমাবদ্ধ ছিল। এ ধানের ভাত খেলে দীর্ঘজীবী ও অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সুবিধা পাওয়া যায় বলে চীনারা বিশ্বাস করতো। তাই রাজ পরিবারের বাইরে এ ধান নিষিদ্ধ ছিল এবং নিষেধ অমান্য করলে সাজা ছিল মৃত্যুদণ্ড।  

তার ভাষায় আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত মাত্রায় এস্থোসায়ামিন ও এন্টি অক্সিডেন্টের কারণে এ ধানের রং বেগুনি হয়। এ ধানে প্রচুর ফাইবার ও ভিটামিন ই থাকায় নিয়মিত এ ধানের ভাত খেলে ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। এ ধান ডায়াবেটিস ও অ্যালঝেইমার রোগেরও ঝুঁকি কমাতেও কার্যকর বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।