তিনি বলেন, চাল রপ্তানি করে বিশ্ববাজারে অবস্থান তৈরি করতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে টিকে থাকাতে হলে মানসম্মত চাল উৎপাদন করতে হয়।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত কৃষক পর্যায়ে ধান-চালের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণের নিমিত্তে সরকার গৃহীত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান সংগ্রহ/প্রক্রিয়াকরণ, মিলারদের মাধ্যমে ক্রাশিং ও সংরক্ষণ এবং চাল রপ্তানি বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, কৃষি, খাদ্য, বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং চাল কল মালিক সমিতির নেতাসহ বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ড. রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশের কৃষি মূল অর্থনীতিতে ভালো অবদান রাখছে। আগামী মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি সরকার ধান সংগ্রহ করা হবে। কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হলে টাকা সরাসরি কৃষকের হাতে যাবে। কৃষকরা রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ফসল ফলাবে, তারা ন্যায্য মূল্য পাবে না এটা হতে পারে না। আগামী মৌসুমে যাতে ধানের মূল্যের ক্ষেত্রে বিরূপ ঘটনার উদ্ভব না হয়, সে ব্যাপারে সরকার প্রস্তুত রয়েছে। কৃষিকে লাভজনক করতে হলে এর উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য শুধু ধান কাটার যন্ত্রই নয়, ধান রোপণ করা এবং মাড়াই করা যন্ত্রেও কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রকে তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হবে- প্রান্তিক চাষি, মাঝারি চাষি ও বড় চাষি। এছাড়া প্রত্যেক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার কাছে আর্দ্রতা মাপার যন্ত্র থাকবে, সে কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে ধানের আর্দ্রতা পরিমাপ করবেন। সরকার ধান সংগ্রহ করে মিল মালিকদের মাধ্যমে ক্রাশ করে চাল করবে। মিল মালিকদের সরকার লাভও দেবে এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মিলাররা সমস্ত দায়িত্ব নিতে চান। এছাড়া তারা কিছু প্রস্তাবনা দেন যেমন রপ্তানি বাজার উন্মুক্ত করা এবং চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষকদের বিনা সুদে বা স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হলে এনজিওর ঋণ পরিশোধের জন্য তাড়াহুড়ো করে ধান বিক্রি করতে হবে না। ধান সংগ্রহ বাড়িয়ে ২০ লাখ মেট্রিক টন করা। বিশ্ববাজারে মোটা চালের চাহিদা রয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ২০১৭ সালে হাওরাঞ্চলের অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফসলের যে ক্ষতি হয়, সে সময় ৪০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়, সে চাল এখনও রয়ে গেছে যার প্রভাব পরেছে এবারের বোরো মৌসুমে।
এছাড়া তিনি আউশ আবাদে প্রণোদনা বাদ দেয়ার কথা বলেন। কৃষকদের বাচাঁতে স্থায়ী সমাধানের পথে যাচ্ছেন। সারাদেশে ১৬২টি খাদ্য গুদাম তৈরি করা হবে, যার মোট ধারণ ক্ষমতা ৭ থেকে ৮ লাখ মেট্রিক টন।
উল্লেখ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ৪১ হাজার মেট্রিক টন চাল রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। গত মৌসুমে আমাদের খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ মেট্রিক টন, এর মধ্যে শুধু ধান উৎপাদন হয়েছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ মেট্রিক টন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৯
জিসিজি/ওএইচ/