জানা যায়, সিএনসি মেশিন মূলত লেদ, মিলিং এবং রাউটারের সমন্বয়ে গঠিত মেশিন; যা আধুনিকতার ছোয়ায় কম্পিউটারাইজড নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল নামে পরিচিত (সিএনসি)।
জটিল কাজগুলো নিখুঁত ও সূক্ষ্মভাবে করার জন্য মিলিং বা লেদ মেশিন ব্যবহার করা হয়।
পণ্য উৎপাদনকারী ছোট থেকে বড় সব প্রতিষ্ঠানে সিএনসি মেশিনের ব্যবহার বাড়ছে। স্বল্প দক্ষতা সম্পন্ন ও স্বল্প শিক্ষিত লোকও এই মেশিন অপারেশন করতে পারে। এর মাধ্যমে নানা ধরনের আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির পার্টস তৈরি সম্ভব। মূলত এই মেশিন চালানো শিখতেই ব্রি-র কর্মকর্তারা বিদেশ সফরে যাচ্ছেন। এই সফরে সরেজমিনে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন তারা।
ব্রি সূত্র জানায়, সিএনসি লেদ মেশিন বাংলাদেশে নতুন। সরকার এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরে টাকা ছাড় হবে না। ২০২০-২১ অর্থবছরে টাকা ছাড় হওয়ার পর ২০ বৈজ্ঞানিক বিদেশ যাবেন।
আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের জন্য লেদ মেশিন চালানো শিখতে দুই ধাপে তারা বিদেশ ভ্রমণ করবেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের ১০ জন বিজ্ঞানীর ৭ থেকে ১০ দিনের স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক প্রশিক্ষণে মোট ব্যয় করা হবে ৫০ লাখ টাকা।
আরেক ধাপে ১০ বিজ্ঞানীর তিন মাসের জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণ নিতে যাবেন বিদেশে। এ খাতে ব্যয় হবে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
কর্মকর্তারা বলছেন, বিজ্ঞানীরা মূলত ধান চাষাবাদের প্রসারে লেদ মেশিন চালানো শিখবেন। পরে দেশে ফিরে সেখানে অর্জিত বাস্তব জ্ঞান ধান চাষবাসের উন্নয়নে প্রয়োগ করবেন।
সূত্র জানায়, ‘যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের লক্ষ্যে খামার গবেষণা কাযর্ক্রম বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে ৪৪ কোটি টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় এক কর্মকর্তার বার্ষিক বেতন ৪২ লাখ ৭২ টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া ১২ কর্মকর্তার বার্ষিক বেতন ৯৮ লাখ ৩২ হাজার এবং ভাতাদি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে এককোটি ৩৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা।
প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন ব্রি’র কর্মকর্তা নূরুল হুদা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের আওতায় সিএনসি লেদ মেশিন চালানো শেখাসহ অন্যান্য কাজে ২০ বিজ্ঞানী প্রশিক্ষণ নেবেন। সিএনসি লেদ মেশিন একেবারেই নতুন। এটা বাংলাদেশে নেই। এটা চালানো শিখতে প্রশিক্ষণ লাগবে।
নূরুল হুদা বলেন, প্রকল্পের আওতায় ৯টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হবে। ওয়ার্কশপ আধুনিকায়ন করা। ব্রি’র প্রধান কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত ১১টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের গবেষণা উন্নত করা হবে।
তবে প্রকৌশলীদের বদলে বৈজ্ঞানিকদের বিদেশ ভ্রমণ প্রসঙ্গে খামার যন্ত্রপাতি ও ফলনোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ব্রি’র বিজ্ঞানীরাই মূলত ইঞ্জিনিয়ার। তারাই এসব গবেষণা করে থাকেন।
‘তাছাড়া সিএনসি মেশিন একেবারেই নতুন। এগুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দরকার আছে। এটা দিয়ে মাল্টিপুল অপারেশন করা হবে। কৃষি যন্ত্রপাতির পার্টস তৈরি করা যাবে,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯
এমআইএস/এমএ