উপজেলার কিটিংচর, খড়ারচর, ভাকুম, দুর্গাপুর ও আজিমপুর এলাকায় শত শত চাষিরা গাজর চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এ অবস্থা দেখে অন্য চাষিরাও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য গাজর চাষে ঝুঁকছেন।
রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজার, শ্যামবাজার, মিরপুর বাজার, নিমসা বাজার,যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আড়তের পাইকাররা গাজর কিনতে সরাসরি চলে আসেন সিংঙ্গাইরে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গাজরের বাম্পার ফলনের জন্য অরেঞ্জ কিং, নিউ করদা, হাইব্রিড সাপাল সিড, টি সামার জাতের বীজ চাষ করে থাকেন চাষিরা। গত বছর ১১ হাজার ১৮ হেক্টর জমিতে গাজরের আবাদ হয়েছিলো তবে এ বছর ১১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে চাষিরা গাজরের আবাদ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর থেকে ক্ষেতে গাজর তুলতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন শ্রমিকরা। জমি থেকে গাজর তুলে নির্দিষ্ট একটি স্থানে একত্র করছেন এবং তা দুপুরের দিকে খোলায় নিয়ে ধুয়ে ফেলছেন। বিকেল নাগাদ পাইকাররা এসে ট্রাকে করে আড়তে নিয়ে যাচ্ছেন সেই গাজর।
দশআনি এলাকার গাজর চাষি রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর আমি আট বিঘা জমিতে গাজরের আবাদ করেছি, ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে গাজরের আবাদের জন্য ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে এ এবার গাজরের দাম বেশ ভালো, এ রকম দাম থাকলে কিছুটা লাভের মুখ দেখবো।
একই এলাকার হানিফ আলী নামে আরেক চাষি বলেন, আমি ১২ বিঘা জমিতে গাজরের অাবাদ করেছি। অাড়তে গাজরের দাম বেশি হলেও আমরা তো সে দাম পাই না। আমাদের কাছ থেকে স্থানীয় পাইকাররা ১৫ টাকা কেজি কিনে তা ২৫ টাকা করে আড়তে বিক্রি করছেন। আমরা যদি সরাসরি গাজর নিয়ে আড়তে বিক্রি করতে পারতাম অথবা আমাদের সিংঙ্গাইরে একটি আড়ত থাকতো তবে গাজর বিক্রি করে আমরা আরও বেশি লাভবান হতাম।
স্থানীয় পাইকার আব্দুল সালাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি নিজের জমিতে এ বছর ১১ বিঘা গাজরের আবাদ করেছি এবং পাশাপাশি স্থানীয় চাষিদের কাছ থেকে গাজর কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার আড়তে বিক্রি করে থাকি। এ বছর প্রতি বিঘা গাজরের জমি ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা করে কিনেছি। গত বছরের চেয়ে এ বছর গাজরের দাম কিছুটা বেশি যার কারণে চাষিরা গাজর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
সিংঙ্গাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. টিপু সুলতান বাংলানিউজকে বলেন, গাজর একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে কৃষিখাতে জায়গা করে নিয়েছে। মানিকগঞ্জের সিংঙ্গাইর গাজর চাষে বেশ খ্যাতি অর্জন করেছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা সরাসরি এসে এখান থেকে গাজর কিনে নিয়ে যান।
এ বছর গাজরের বাম্পার ফলন হয়েছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর পাইকারি বাজারে গাজরের দামও বেশি তাই এবার চাষিরাও মহা খুশি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে গাজর চাষে কৃষকদের সব রকম সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২০
আরএ