রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের লাঠিভাঙ্গা ও ইটাহাটার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে কৃষি জমি। এসব জমিতে অনেকেই চাষাবাদ করছেন।
এলাকাবাসী জানায়, লাঠিভাঙ্গা ও ইটাহাটা এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এক সময় নিয়মিত চাষাবাদ হতো। দিন দিন স্থানীয় অটোব্রিকস ও ইটভাটায় এসব জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে কৃষি জমি কমে এসেছে। ফলে চাষাবাদ কমছে। বেশি টাকার লোভে অনেকেই কৃষি জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে ওই জমির পাশে থাকা জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন। কোন ধরনের নিয়মনীতি না মেনে গত কয়েক বছর ধরেই এসব কৃষি জমি থেকে অটোব্রিকস ও ইটভাটায় মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।
চলতি বছরে অটোব্রিকস ও ইটভাটায় মাটির জোগান দিতে ওইসব এলাকার কৃষি জমির মাটি বিক্রির প্রস্তুতি চলছে। এরই মধ্যে অনেক জমির মাটি কেটে নেওয়ায় বড় বড় খাদ তৈরি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ওইসব এলাকাগুলো থেকে এক সময় কৃষি জমি বিলিন হয়ে যাবে। এসব কৃষি জমি রক্ষায় এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনসহ সব মহলের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন নতুন করে আর কোন কৃষি জমি নষ্ট না হয়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, গত কয়েক বছর ধরেই কোনাবাড়ী এলাকায় ইউনিক সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি অটোব্রিকসসহ বিভিন্ন ইটভাটায় এ এলাকার কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়। যার ফলে এসব কৃষি জমিতে বড় বড় খাদ তৈরি হয়েছে। কমে যাচ্ছে কৃষি জমি ও নানা ধরনের ফসল ও সবজি আবাদ। কৃষি জমি রক্ষায় সরকারের নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসন কোনো হস্তক্ষেপ করছেন না। এবছরও এসব কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার পায়তারা করছে কিছু মাটি ব্যবসায়ী। প্রশাসন চাইলে এসব কৃষি জমি রক্ষা করা সম্ভব।
মাটি কেটে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ইউনিক সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজার শফিক আহম্মেদ বলেন, আমরা সরাসরি কোনো কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নেই না। মাটি ব্যবসায়িদের কাছ থেকে মাটি কিনে আনা হয়। তবে মাটি ব্যবসায়িরা কোথায় থেকে মাটি আনে তা আমরা জানি না।
গাজীপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা সুলতানা বলেন, বর্তমানে দেশে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। আমাদের উচিত কৃষি জমি টিকিয়ে রেখে কিভাবে দেশের উন্নয়ন করা যায় সেগুলো পথ খুঁজে বের করা। কৃষি জমি নষ্ট করা যাবে না, তা রক্ষা করতে হবে। এরই মধ্যে কৃষি জমি কমে যাওয়ায় ফসলে প্রভাব পড়ছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মশিউর রহমান বলেন, কৃষি জমি থেকে অনুমোদন ছাড়া গভীর করে মাটি কাটার কোনো নিয়ম নেই। তবে যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২০
আরএস/ওএইচ/