ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

বাড়ছে নদ-নদীর পানি, ধান তলিয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪১ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২০
বাড়ছে নদ-নদীর পানি, ধান তলিয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষক

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে উজানের পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে আকস্মিকভাবে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের উঠতি বোরো ধান ক্ষেত। ফলে চরাঞ্চলের জমির আধা-পাকা ধান পানিতে তলিয়ে থাকায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার যাত্রাপুরের চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, সম্পূর্ণরুপে নষ্ট হওয়ার আশংকা নিয়েই কৃষকরা পানিতে তলিয়ে থাকা কিছু ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। কুড়িগ্রাম জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্র‏হ্মপুত্র ও দুধকুমর অববাহিকার প্রায় ২ শতাধিক চরে চরাঞ্চলের কৃষকরা দেরিতে ২৯ জাতের বোরো ধান চাষ করায় তা এখনও ঘরে তুলতে পারেনি।

আগাম বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় এই পরিস্থিতিতে চরাঞ্চলে বোরো চাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন কৃষকরা।

কুড়িগ্রাম সদর উপেজেলার পোড়ার চর, মাঝিয়ালির চর, বড়ুয়া, রলাকাটা, ভগবতীপুর, পারবতীপুর, ঝুনকার চর, নাগেশ্বরীর নারায়রনপুর, কালার চর, অষ্টআশির চর, উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা, জাহাজের আলগা, দুই খাওয়া, আইরমারীসহ রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার প্রায় ২ শতাধিকচরসহ নিন্মাঞ্চলগুলোতে আবাদকৃত বোরো ধানের বেশিরভাগই পানির নিচে তলিয়ে আছে।

ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষক আয়নাল হক, শামসুল হক, আছমত আলীসহ অনেক কৃষক বাংলানিউজকে জানান, কয়েকদিনের টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে হঠাৎ করেই তলিয়ে গেছে নিন্মাঞ্চলের বোরো ধান ক্ষেত। ধান ঘরে তোলার আগ মুহুর্তেও কৃষকরা আশা করছিলেন ভালো ফলন পাবার।

কৃষকরা আরও জানায়, অধিকাংশ কৃষক ধার-দেনা করে আবাদ করে এই বোরো ধান দিয়েই সারা বছর চলে যায়। কিন্তু এবার প্রকৃতির এই বৈরী আচরণে তারা অর্ধেক ধানও ঘরে তুলতে পারছি না। হঠাৎ পানি বাড়ার কারণে পাকা ধানসহ ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের কৃষকরা।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য শাহা জামাল জানান, যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের সমস্ত ২৯ জাতের বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে আছে। কয়েকদিন ধরে এসব ধান পানির নিচে থাকায় তা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে করে এসব এলাকার কৃষকের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আইযুব আলী সরকার বাংলানিউজকে জানান, চরাঞ্চলগুলোর কৃষকরা যে বোরো আবাদ করেছেন পানি আসার আগে তার অর্ধেকও ঘরে তুলতে পারেননি। এখন দ্রুত পানি নেমে না গেলে তলিয়ে থাকা ধান নষ্ট হয়ে যাবে। কৃষকদের আকস্মিক এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান প্রধান বাংলানিউজকে জানান, চরাঞ্চলের মানুষ দেরিতে ধান কাটে এবং অনেক ধান তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। পানি কমে গেলে তারা তা কাটতে পারবেন। এছাড়াও যেসব ধান দেরিতে লাগানো হয়েছে চরাঞ্চলের শুধু সেসব ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি। ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণে কাজ চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২০
এফইএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।