ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ভুট্টায় ভাগ্য বদলের চেষ্টা, ব্যস্ততায় সময় কাটছে কৃষকের

কাওসার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৪ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২০
ভুট্টায় ভাগ্য বদলের চেষ্টা, ব্যস্ততায় সময় কাটছে কৃষকের

বগুড়া: ভুট্টায় ভাগ্য বদলের চেষ্টা করে যাচ্ছেন বগুড়ার কৃষকরা। জেলার কয়েকটি উপজেলায় অনেক কৃষক তাদের ফসলি জমিতে নিয়মিতভাবেই প্রতিবছর ভুট্টা চাষ করেন। এই ফসলের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল তারা।

জেলার কয়েকটি উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, উৎপাদিত ফসল ভুট্টা বাজারজাতকরণে কৃষকের কর্মব্যস্ততা।

এ বছর রোগবালাই তেমন ক্ষতি করতে পারেনি ফসলের।

ফসলও গত বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে। এ ফসল উৎপাদনে কৃষক ত্রিমুখীভাবে লাভবান হয়ে থাকে। সবমিলিয়ে ভুট্টাতেই ভাগ্য বদলাতে চান বগুড়ার অনেক কৃষক।

বগুড়ার শেরপুর, ধুনট, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা হলে এসব তথ্য উঠে আসে।

ভুট্টা বাছাই করছে কৃষক।  ছবি: বাংলানিউজশেরপুর ও ধুনট উপজেলার মীর ফেরদৌস, ইমতিয়াজ উদ্দিন, আব্দুর ওয়াহেদ বাংলানিউজকে জানান, বাপ দাদার আমল থেকে তারা ভুট্টা চাষ করেন। এ ফসল মানুষের নানা ধরনের খাদ্য ও শিল্পজাত ছাড়াও বহুবিধ কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই তারা এটিকে বাদ দিয়ে অন্য ফসলের চিন্তা করতে পারেন না।

ইমরান হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এ বছর মোট ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন তিনি। বর্তমানে আবহাওয়া ভালো না থাকায় তড়িঘড়ি করে ফসল ঘরে তুলছেন তিনি। বেশিরভাগ জমির ফসল ঘরে তুলেছেন ও বাজারজাত করেছেন। বাকি অল্প কিছু জমির ফসলের কাজ শেষ করতে সপ্তাহ খানেক সময়ের প্রয়োজন।  

সারিয়াকান্দি ও সোনাতলার কৃষক আফজাল মন্ডল ও হায়দার আলী বাংলানিউজকে জানান, এ উপজেলার চরাঞ্চগুলোতেও ভুট্টা চাষ হয়ে থাকে। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে তাদের টিকে থাকতে হয়। কেননা চরের পলি বা বেলে যুক্ত মাটি সাধারণত পানি ধরে রাখতে পারে না। পানির স্তরও তেমন একটা ভালো না। তাই স্বল্প সেচের ফসল চরের মাটিতে চাষের চিন্তা করতে হয় তাদের। স্বল্প সেচের ফসলের কথা চিন্তা করে ও নিজেদের ভাগ্য বদলে ভুট্টাই বেছে নেন তারা। এ ফসল ধানের তুলনায় লাভজনক ও জমিতে সেচ কম দিতে হয়। ফলনও বেশ ভালো হয়। প্রায় সময়ই বাজারে দাম ভালো থাকে এ ফসলের।

ভুট্টা ছাড়িয়ে স্তুপ করছে  কৃষক।  ছবি: বাংলানিউজতারা আরও জানান, কয়েক বছর আগে থেকে চরাঞ্চলের কৃষক অল্প অল্প করে ভুট্টার আবাদ শুরু করেন। সময়ের ব্যবধানে চাষের জমির পরিধি বাড়িয়ে নেন তারা। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরও চরের অনেক জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন চরাঞ্চলের চাষিরা।

এসব চাষিরা জানান, বীজ, সার, পানি, জমি প্রস্তুত, লাগানো, শ্রমিক মজুরি, কাটা-মাড়াইসহ প্রতি বিঘায় তাদের খরচ হয় সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা। এরমধ্যে প্রতি বিঘায় উৎপাদন হয় গড়ে ৩৫-৪৫ মণ হারে। তারা প্রতিমণ শুকনো ভুট্টা বাজারে বিক্রি করছেন ৬০০-৬৫০ টাকা এবং একটু ভেজা ভুট্টা বিক্রি করছেন ৪৫০-৫০০ টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. ফরিদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এ জেলার কয়েকটি উপজেলায় রবি ও খরিফ দুই মৌসুমে ভুট্টা চাষ হয়ে থাকে। এ বছর রবি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করে চাষিরা। যার মোট উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৭৪ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ভুট্টা। খরিফে জেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে এ জেলায় রবি মৌসুমে ভুট্টার চাষ শুরু করা হয়। যা কৃষকের ঘরে উঠতে সময় লাগে ৫ থেকে ৬ মাস। খরিফ মৌসুমের চাষ শুরু হয় এপ্রিল মে থেকে। ভুট্টার এ আবাদ উঠতে মোটামুটি সময় লাগে ৪ থেকে ৫ মাস।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২০
এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।