খুলনা: বেড়িবাঁধের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ফাটল ধরেছে। অনেক জায়গায় বাঁধের একাংশ ভেঙে গেছে।
খুলনার দাকোপ উপজেলোর ঢাকী ও শিবসা নদীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩১ পোল্ডারে ভয়াবহ নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। লাগাতার ভাঙনে সংকিত এলাকাবাসী।
তারা আশঙ্কা করছেন যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ জমির আমন ধান শীতকালীন সবজি তলিয়ে যেতে পারে।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, প্রতিনিয়ন বাঁধ ভাঙছে। অথচ ভাঙনরোধে এখন পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড বা স্থানীয় প্রশাসন কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। এলাকার মানুষ শঙ্কিত যদি ভাঙনরোধে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নেয় তাহলে তারা এ বছর আমন ধান ঘরে তুলতে পারবেন না। বটবুনিয়া ও তিলডাঙ্গার স্থানীয়রা বলেন, আমাদের এখানের ৩১ নম্বর পোল্ডারের বেড়িবাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বাঁধ ভেঙে গেলে পানি ঢুকে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে হাজার হাজার বিঘা জমির আমন ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উপকূলের অসহায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ সংস্কারের দাবি জানান তারা।
শনিবার (২১ নভেম্বর) দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রণজিৎ কুমার মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, দাকোপ উপজেলোর পাউবোর ৩১ নম্বর পোল্ডারের বিভিন্ন স্থানের বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে ১০ হাজার বিঘা জমির আমন ধান বিনষ্টের আশঙ্কা করা হচ্ছে। শিপসা নদীর ঝালবুনিয়া গোলদার বাড়ি থেকে শাপলা ক্লাব পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার, খোনা আর অ্যান্ড এসইচ টু গোড়ইখালী জিসি রাস্তার গাইনবাড়ির পাশের প্রায় দেড় কিলো মিটার, মাওলত সাহেবের গ্যাচারির পাশে ১ কিলো মিটার, মিস্ত্রীর বাড়ির পাশে ৫০০ মিটার, বটবুনিয়া জিসি টু মোজামনগর রাস্তার প্রথম অংশ হরিসভার পাশে প্রায় ৮০০ মিটার। এ পিচের রাস্তাটির ১০০ মিটার নদীর মধ্যে চলে গেছে। আমরা স্থানীয় লোকজন নিয়ে রিংবাঁধ দিয়ে ভাঙনরোধ করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, ৩১ নম্বর পোল্ডার ভেঙে তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন, পানখালি ইউনিয়ন ও চালনা পৌরসভার বিশাল এলাকা পানিতে প্লাবিত হবে। বেড়িবাঁধে ভাঙন প্রসঙ্গে পাউবোকে বার বার জানানো হচ্ছে। কিন্তু কোনো প্রতিবার হচ্ছে না। পাউবোর প্রকৌলশীরা জানিয়েছেন বরাদ্দ নেই, এর কারণে বাঁধ সংস্কার করা যাচ্ছে না।
খুলনা জেলার পাউবো-২ নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কান্তি ব্যানার্জী বাংলানিউজকে বলেন, বাঁধ ভাঙনের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। আমি ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। ১০-১৫ দিন পর ধান উঠে গেলে রাস্তা ঠিক করার কাজ শুরু করবো। আশা করি, এ কয় দিনে সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, ভাঙন কবলিত বেশ কিছু জায়গার জন্য জিওব্যাগ দিয়েছি। ৩১ নম্বর পোল্ডারের পুনর্বাসনের ১২৪৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে যা প্লানিং কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২০
এমআরএম/এএটি