অমৃত ও গরল
একদিন সে হঠাৎ জিজ্ঞেস করল এসে
আচ্ছা, তুমি কি হাত দেখতে পারো?
বলো তো অর্থ যশ খ্যাতি আমার হবে কত আরো
আবার বলল সলাজ হাসি হেসে
আচ্ছা বলতে পারবে আমার হবে কয়টা ছেলেমেয়ে
আমার যে খুব শখ একদঙ্গল ছেলেপুলে নিয়ে
বনহরিণীর মতো ছুটে ছুটে বেড়াব।
বললাম, রেখা টেখা কিছুই নয় ওসব মিছে
তুমি বরং খোঁজো সেই পুরুষ, ভালোবেসে যে অমৃত দেবে
জানো তো, পুরুষ অমৃত দিলে নারীর সব সাধ যায় মিটে
জানতাম অমৃতের সন্ধানে সে আসবে আমার কাছে
আমি তো আগেই হৃদয় বন্ধক দিয়ে
এনেছি অমৃত এক ভাণ্ড, অমৃত সরোবর ছিনিয়ে
প্রমিথিউসের মতো সেটা তাকে দেব।
কিন্তু সে বুঝল না সেই কথা
বরং অমৃত চাইল সেখানে, যাদের নাম যশ আছে মেলা
আর তারা তাকে নিয়ে খেলল এক বাঁদর নাচ খেলা
দেখলাম নীরবে সয়ে তীব্র ব্যথা
অমৃত ভাণ্ড নিয়ে আবার গেলাম তার পিছু
সে যে অন্ধ তখন, মানল না কোনোকিছু
বলল এরাই অমৃত লাভের সহজ উপায়।
আর সমাজের সেইসব কাণ্ডারী
যারা আজন্ম রাখেনি অমৃতের সন্ধান
অমৃতের বদলে তাকে গরল করল দান
আসলে সবাই তো তারা গরলেরই কারবারি
তাদের কাছে তো এটা দোষের কিছু নয়
অবশেষে ভাঙল ভুল, হলো বোধদয়
কান্নায় লুটিয়ে বলল, শুদ্ধ করে দাও আমায়।
কিন্তু অমৃত ভাণ্ডটি কবেই আমি ফেলে দিয়েছি নর্দমায়
গরল কন্যা, বলো তো এখন কী দিয়ে শুদ্ধ করি তোমায়।
ঋণ
সেদিন একটা জার্নাল পড়েই জানলাম
খাঁটি চোখের জলের নাকি আছে অনেক দাম
হৃদপিণ্ডকে তা দেয় ধুয়ে মুছে সাফ করে
হৃদপিণ্ড সবল হয়, আয়ু নাকি যায় বেড়ে।
তোমার জন্য একজীবনে অনেক তো কাঁদলাম
কেঁদে কেঁদে হয়রান হয়ে অবশেষে থামলাম
এখন দেখছি নতুন অঙ্ক এলো হিসাবের ঘরে
কাঁদিয়েও তুমি যে আমায় রেখেছো ঋণী করে।
কোনো কিছু দিতে তোমায় বিলম্ব করিনি কখনো
এই ঋণটিও বাকি রাখার মানে হয় না কোনো
ভাবছো বুঝি নিঃস্ব আমি ঋণ শুধব কী দিয়ে?
বলছি শোনো, এই ঋণটি শুধব আমি তোমায় কাঁদিয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৫