মায়ের গল্প
বেগুন গাছের চারা লাগাতে লাগাতে মা বলতেন, ভবিষ্যত দেখা যাবে একদিন এই গাছটিতে। আরো বলতেন, ঝিনুকের পেটে মুক্তোর অস্তিত্বের কথা।
অবশেষে বেগুন গাছটি নেতিয়ে পড়ে একদিন উঠোনের একপাশে। মাকে বলি, আই এম নট এক্সেপট দিস লাইফ! তবু মায়ের হাসিতে দোলে ভরসার ছায়া। সিদ্ধান্তের শরীরে হুইসেল বাজিয়ে নির্ভরতার গন্ধ আসে পাখিযানে। আমি ভাবি কতটা নিরেট এই আসা-যাওয়া!
ইতিহাস, বাবাকে হারানোর—অথচ, সঙ্গীর কথা ভেবে একদিনও প্রকাশ্যে কাঁদেনি আমার মা।
সভ্যতার পাঠ
দ্বিধা ভেঙে গেলে কারো কাছে জীবনযুদ্ধ মানে
কার্তিক মাসের ক্ষুধা
অভাবের কাঠফাটা রোদে পুড়ে পুড়ে
আনোয়ারা থেকে লোকের মুখে হয়ে ওঠা আনু
চিৎকার করে মাতিয়ে তোলে পাড়া—
‘ভাত চাই ভাত,
পূর্ণিমাসের চাঁদের লাহান
এক থাল ভাত’
পৃথিবীর সব অভাব পেটের ভেতর খচ্ খচ্ করে
তার কাছে এখন সব কিছুই ভাতগন্ধী
স্বার্থের ঘর কিংবা প্রশস্ত নগরীর খোলা মাঠ।
একদিন বিষাক্ত নখরে দংশিত হয় আনু
নগরীর সম্ভান্ত পথে
চোখে শুকিয়ে যাওয়া অশ্রুজল
বস্ত্রহীন হিমদেহ খুঁটে খায় মাছিদের পাল!
আনু এখন হেমন্ত কুয়াশায় ঝলসে যাওয়া স্মৃতি
সভ্যতা শেখায় প্রতিক্ষণ!
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৫