ঢাকা, শনিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

বিএনপি

শিমুল বিশ্বাসে ‘অবিশ্বাস’ বিএনপি নেতাদের!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
শিমুল বিশ্বাসে ‘অবিশ্বাস’ বিএনপি নেতাদের! বিএনপি নেতা শিমুল বিশ্বাস (ফাইল ছবি)

কথায় আছে ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর’। তবে তর্ক অনেক দূর এগুলেও, খালেদা জিয়ার বস্তু মিলেছে ‘বিশ্বাসেই’। অবশ্য এই ‘বিশ্বাস’ সেই ‘বিশ্বাস’ নয়। তার...

ঢাকা: কথায় আছে ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর’। তবে তর্ক অনেক দূর এগুলেও, খালেদা জিয়ার বস্তু মিলেছে ‘বিশ্বাসেই’।

অবশ্য এই ‘বিশ্বাস’ সেই ‘বিশ্বাস’ নয়। তার নাম শিমুল বিশ্বাস।

বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ‘একান্ত বিশ্বাসভাজন’ বিশেষ সহকারী তিনি। যদিও শিমুল বিশ্বাসে ‘অবিশ্বাস’ বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীরই।

রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে ছিলেন নকশাল নেতা। মাথার ওপর ঝুলতো হুলিয়া। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে থাকতেন আন্ডারগ্রাউন্ডে।

 অবশ্য এখনও মাথার ওপর ঝোলে হুলিয়া। পুলিশের খাতাতেও তিনি আন্ডারগ্রাউন্ডে। তবে এই আন্ডারগ্রাউন্ডের ঠিকানা সবাই জানে। গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনই সেই ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’। দিবারাত্রি সেখানেই থাকেন আইনের চোখে এই পলাতক আসামি।

তার বিরুদ্ধে মামলা ৪৭টি। গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে অন্তত ১০টিতে।

আইনের চোখে পলাতক এবং গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি কোন ক্ষমতার জোরে অবস্থান করেন খালেদা জিয়ার বাসভবনে। এটাই এখন প্রশ্ন বিএনপি নেতাকর্মীদের।
দলীয় প্রটোকলে খালেদার পর বিএনপির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা তারেক রহমান। কাগজ-কলমে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের অবস্থান তৃতীয়।
 
তবে শোনা যায়, তারেকের অবর্তমানে খালেদার পরপরই বিএনপির দ্বিতীয় প্রধান নেতা শিমুল বিশ্বাস। যদিও দলে সাংগঠনিক কোনো পদ নেই তার।

প্রায়ই পত্রপত্রিকায় তার নাম উঠে আসে। তবে ‘আলোচনা’র বদলে ‘সমালোচনা’ই হয় বেশি।

বিএনপি’তে তার যাত্রা অবশ্য বেশি দিনের নয়। এ ঘাট, ও ঘাট মাড়িয়ে বিএনপির ঘাটে নৌকা বাঁধেন ২০০১ সালে। সেখান থেকে তিনি এখন বিএনপির ‘নীতিনির্ধারক’ সেজে বসে আছেন। অনেকটা যেন ‘গায়ে মানে না আপনি মোড়লের মতো’।

বিএনপির বাঘা বাঘা নেতাদেরও এখন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে ‘অনুমতি’ নিতে হয় শিমুল বিশ্বাসের কাছে।

তবে ‘সৌভাগ্য’ সবার হয় না।   শুধুমাত্র শিমুল বিশ্বাসের ‘বিশ্বাসভাজন’ নেতাদেরই নাকি মেলে খালেদার ‘দর্শনলাভ’। প্রভাবশালী ওই কর্মকর্তার অনুমতি বাদে খালেদা জিয়ার আত্মীয়দেরও বাসা কিংবা কার্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।
 
তৃণমূলের অনেক নেতার গুলশান কার্যালয়ে এসে আক্ষেপ করে ফিরে যাওয়ার বহু নজির রয়েছে।  
 
‘খালেদা জিয়া এখন কারাগারে বন্দি, আর এই কারাগারের জেলার শিমুল বিশ্বাস। ’ মনের দুঃখে এ মন্তব্য করেছিলেন দলটির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের।
একবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে তার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান। কিন্তু তাকে ভেতর থেকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কার্যালয়ে প্রবেশে ভেতর থেকেই বাধা পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এই সাবেক এমপি।

সম্প্রতি বাংলাদেশে সফররত চীনের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকে অনাহূত হয়েও তার উপস্থিতি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।

শোনা যায়, বিএনপির প্রতিনিধি দলের সদস্য রিয়াজ রহমানকে কায়দা করে দেরি করিয়ে দিয়ে বৈঠকে তার জন্য রাখা চেয়ারে গিয়ে আগেই বসে পড়েন শিমুল বিশ্বাস।
বিষয়টিতে অবাক চীনারা এ ব্যাপারে আপত্তি জানালেও চেয়ারে গ্যাট হয়ে বসে ছিলেন শিমুল বিশ্বাস। এমনকি খালেদা জিয়ার সঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্টের একান্ত বৈঠকেও নাকি তিনি উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, পরবর্তীতে বিএনপিকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়টি জানতে চায় চীন। ওই চিঠিতে অনুমোদিত ব্যক্তি না হয়েও শিমুল বিশ্বাসের বৈঠকে অংশগ্রহণের কারণ জানতে চাওয়া হয়।
 
নিন্দুকেরা তাকে বলেন ক্ষমতাসীন সরকারের ‘এজেন্ট’। কেউ বলেন ঘরের শত্রু ‘বিভীষণ’। তারা প্রশ্ন তোলেন, কী করে সরকারের আইন শৃঙ্খলা-বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে এতো বড় একটি বৈঠকে অংশ নিতে পেরেছেন তিনি।

অনেকে আবার এও বলে থাকেন, খালেদা জিয়ার খাবার মেন্যুতে কি কি খাবার আছে, সে খবর ঠিকই চলে যায় সরকারের কাছে। আর একজন ‘বিশ্বাসভাজন’ ব্যক্তিই এসব খবর পাচার করেন।  

শুধু তাই নয় খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমানে যে মুখ দেখাদেখিও বন্ধ এর নেপথ্য কারিগর নাকি শিমুল বিশ্বাস।

বাকি অংশ পড়তে ক্লিক করুন: শিমুল বিশ্বাসে ‘অবিশ্বাস’ বিএনপি নেতাদের! (বাকি অংশ)

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।