ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

‘আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৯
‘আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়’ মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ

ঢাকা: যেহেতু আদালতের মাধ্যমে সম্ভব নয়, তাই আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

বৃহস্পতিবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মওদুদ বলেন, আন্দোলন বললেই আন্দোলন হবে না।

আমাদের নেতাকর্মীরা যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের ঘর-বাড়ি পুড়িয়েছে, যাদের হত্যা করেছে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

আন্দোলন বিষয়ে মওদুদ বলেন, আন্দোলন কাকে নিয়ে করবেন? যারা আন্দোলন করবে তারা তো দাঁড়াতে পারে না। আন্দোলন যাদের নিয়ে করবেন তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। তাদের মধ্যে আস্থা-বিশ্বাস ফিরিয়ে আনেন। তাদের আমাদের সঙ্গে একত্রিত করেন। তাহলে তারা খালেদা জিয়ার জন্য আন্দোলন করবেন। এই দুঃসময়ে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ও তরুণদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। এই পুনর্বাসন যদি আমরা করতে পারি তাহলে সম্ভব। এই সরকার যে শূন্যতা সৃষ্টি করেছে তা আর তখন থাকবে না। সরকার বেশিদিন আনন্দে থাকতে পারবে না। কোনো না কোনো সময়ে আন্দোলন হবে, সরকারের পতন হবে।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা জানিয়ে মওদুদ আহমদ বলেন, গত সপ্তাহে দেখা হয়েছে নেত্রীর সঙ্গে। তার শরীর খুবই নরম হয়ে গেছে। কিন্তু মনোবল শক্ত। দুই হাতে ব্যথা, ফুলে গেছে। পা মাটিতে রাখা সম্ভব হয় না। আজকে এক বছর হয়ে গেছে কারাবন্দির।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে একটি ছোট্ট, ভিত্তিহীন কারণে সাজা দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় ৭ দিনের বেশি জেলে থাকার কথা নয়। অথচ হাইকোর্টে জামিনের পরও তাকে দুই মাস জেলখানায় থাকতে হলো। তাকে এরপর ছেট ছোট মামলায় ‘শ্যোন অ্যারেস্ট’ দেখানো হয়। কুমিল্লা, নড়াইল আর ঢাকার তিনটি মামলায় তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। এরপর চলে গেলো নিম্ন আদালতে। নিম্ন আদালত তো পুরোপুরি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। সুপ্রিমকোর্টের কোনো এখতিয়ার নাই বললেই চলে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার বলেন, আমরা এমন অবস্থায় আছি, আইনের মধ্য দিয়েও খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না, বেআইনিভাবেও না। তাই আমাদের মাঝামাঝি কিছু একটা করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

মতবিনিময় সভায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়া কোনো মুক্তি নাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি নাই, ১৬ কোটি মানুষের মুক্তি নাই। এ লক্ষ্যে প্রতিদিন আন্দোলন হবে প্রতি সপ্তাহে আন্দোলন হবে। আর সেই আন্দোলন করেই আমাদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন ও  জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক জয়নুল আবেদীন বলেন, বিএনপি শক্তিশালী না হলে আইনজীবী সংগঠনও শক্তিশালী হয় না। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি অনেকবার দেখেছি আইনিভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। এখন আমাদের উচিৎ ঐক্যবদ্ধ হওয়া, ঐক্যবদ্ধ না হলে যতোই আন্দোলন কর্মসূচি দেন কোনো লাভ হবে না।

সুপ্রীম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন ও জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, মাহবুবউদ্দিন খোকন, জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাড. মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আজাদ মাহবুব, শাহ আহমেদ বাদল, অলিউর রহমান খান, খোরশেদ মিয়া আলম, মনির হোসেন ও সাইদুর রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৯
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।