ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

মানুষের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না: মোশাররফ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৯
মানুষের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না: মোশাররফ

ঢাকা: সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জনগণকে যারা অবজ্ঞা করে তাদের পরিণতি শুভ হয় না। গণমানুষের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। ভোলার গণহত্যার বিচার করতে হবে। জনগণের দাবি অবিলম্বে মেনে নিতে হবে।

সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ভোলা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ড. মোশাররফ বলেন, এই দেশ অনাদিকাল থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনুপম নিদর্শন হয়ে আছে।

এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের শান্তিপূর্ণ বসবাস। কোনো ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করা বা কারো ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করা এই দেশের আবহমানকালের ঐতিহ্যে নেই। আমরা মনে করি, ভোলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। ভোলাকে রক্তে রঞ্জিত করার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদেরকে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিতে হবে।

আরও পড়ুন>>>ভোলার ঘটনার প্রতিবাদে বিএনপির কর্মসূচি বুধবার

নিহতদের রুহের মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে তিনি বলেন, মহান আল্লাহ ও মহানবীকে (স.) নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে সমাবেশে পুলিশের গুলিবর্ষণে চারজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। পুলিশের এমন মারমুখী আচরণ ও নিষ্ঠুরতা ক্ষমার অযোগ্য। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জবাবদিহিতা করতে হয় না বলেই সামান্য কিছুতেই গুলি করে মানুষ হত্যা এখন নিত্যদিনের ঘটনা।  

‘ভোটবিহীন সরকারের দুঃশাসনে মানুষের জীবনের মূল্য পশু-পাখির চেয়েও কমে গেছে। বিদেশে অনেক বড় বড় বিক্ষোভে পুলিশকে একটি বুলেট খরচ না করেও ধৈর্য সহকারে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে দেখেছি। আর এই দেশে কিছু ঘটলেই পুলিশ অসহিষ্ণু আচরণ করে। ক্ষমতা হারানোর শঙ্কায় প্রতিনিয়তই সরকার ও তাদের রক্ষাকারী বাহিনী অস্থির। বিক্ষোভটি করতে দিলে কি সরকারের পতন হয়ে যেত?’

তিনি বলেন, মহান আল্লাহ এবং মহানবী (সা.) সম্পর্কে অশালীন মন্তব্যের জেরে সাধারণ মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা প্রতিবাদের জন্য স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে জড়ো হয়েছিল। এই প্রতিবাদী মানুষের ওপর পুলিশের বেপরোয়া গুলিতে রক্তাক্ত হয় ভোলা। কী ছিল তাদের অপরাধ? 

‘তারা একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য জড়ো হয়েছিল। এটি তো কোনো অপরাধ নয়। তারা কোনো ভাঙচুর করেনি। কারো ক্ষতি করেনি। প্রতিবাদ করা কি অন্যায়? তারা কি কোনো দাঙ্গায় লিপ্ত হয়েছিল? যেকোনো ধর্ম সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করলে মানুষের বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠা নতুন কিছু নয়। এটাই স্বাভাবিক,’ যোগ করেন তিনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, স্থানীয় প্রশাসন সুকৌশলে ভোলার মানুষের প্রতিবাদটিকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার ঘৃণ্য চক্রান্ত চালাচ্ছে। অথচ আপনারা ভোলা হত্যাকাণ্ডের পর সরকার এবং প্রশাসনের বক্তব্য ও মন্তব্য শুনলে অনুধাবন করতে পারবেন যে, তারা দুঃখ প্রকাশ না করে হত্যকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাইছে। আর প্রধানমন্ত্রী তার স্বভাবসুলভ ভাষায় প্রতিবাদকারীদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নূরী আরা সাফা, সহ-দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, নির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম  প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৯
এমএইচ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।