ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

সময় বাড়িয়ে বিদায় নিচ্ছে মেলা

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৪
সময় বাড়িয়ে বিদায় নিচ্ছে মেলা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: আর দু’দিন বাদেই সাঙ্গ হবে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। পথেলা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী মেলা ২৬তম দিনে যথারীতি বিকেল ৩টায় শুরু হলেও চলে আধা ঘণ্টা বেশি।



বিগত দিনগুলোতে রাত সাড়ে ৮টায় মেলার প্রবেশ দ্বার বন্ধ হয়ে গেলেও এদিন থেকে আধাঘণ্টা বেশি উন্মুক্ত থাকে মেলা প্রাঙ্গণ। ফলে পাঠক-ক্রেতা-দর্শনার্থীরা মেলা প্রাঙ্গণে আরো কিছুটা সময় থাকার সুযোগ পায়।

তবে বুধবার মেলার শুরুতেই সময় বাড়ানো নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। বিকেল তিনটায় মেলা কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে শেষ ক’দিনের মেলা রাত সাড়ে ৮টার পরিবর্তে ৯টায় শেষ হবে এবং বৃহস্পতিবার মেলা শুরু হবে বেলা তিনটার পরিবর্তে দুইটা থেকে।

তবে রাত নয়টায় মেলা শেষ হওয়া নিয়ে আপত্তি না জানালেও বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় মেলা শুরু করার সিদ্ধান্তে আপত্তি জানায় প্রকাশকরা।
 
তাদের অভিযোগ, মেলা কর্তৃপক্ষ প্রকাশকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এককভাবে মেলার সময় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পরে প্রকাশকদের আপত্তির মুখে মেলা কর্তৃপক্ষ আবারও মেলার সময় পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়।     
 
বুধবারের নতুন বই
বুধবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২৬তম দিনে ১১টি গল্প, ১০টি উপন্যাস, আটটি প্রবন্ধ, ৩১টি কবিতা, তিনটি গবেষণা, দুইটি ছড়া, পাঁচটি শিশুতোষ, একটি জীবনী, একটি নাটক, পাঁচটি ভ্রমণ কাহিনী, ছয়টি ইতিহাস, দুইটি চিকিৎসা বিষয়ক, দুইটি রম্য/ধাঁধা, একটি ধর্মীয়, দুইটি অনুবাদ, একটি সায়েন্স ফিকশন এবং ১৬টি অন্যান্যসহ মোট ১০৭টি নতুন বই এসেছে মেলায়। এর মধ্যে নজরুল মঞ্চে ১৪টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
 
বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি
বিকেল সোয়া চারটায় বাংলা একাডেমিতে দুষ্প্রাপ্য বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে একাডেমির মূলমঞ্চের তোরণে বিশ্বের মহাবিপন্ন তালিপাম বৃক্ষের দুটো চারা এবং দুষ্প্রাপ্য নাগলিঙ্গম বৃক্ষের চারা রোপণ করেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিপন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন-বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান চৌধুরী।
 
মূলমঞ্চের আয়োজন
বিকেল চারটায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে জামদানি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বলেন, বাংলা একাডেমির উদ্যোগে ইউনেস্কোর Convention for the Safeguarding of Intangble Cultural Heritage শীর্ষক কর্মসূচির চলমান প্রক্রিয়া ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্বমূলক তালিকা’য় সম্প্রতি স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানি বুনন শিল্প। মনোমুগ্ধকর অসংখ্য নকশা মিহি সুতোর বুননে তাঁতীরা জামদানিকে নিয়ে গেছে মননশীল শিল্পের এক অনন্য উচ্চতায়। বস্তু হিসেবে জামদানি tangible সংস্কৃতির উপাদান হলেও তাঁতীদের অনবদ্য শিল্পনৈপুণ্যে Intangible সংস্কৃতির উপাদানে পরিণত হয়েছে।

আলোচকরা বলেন, ইতিহাসের পথ-পরিক্রমায় বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে জামদানির কম-বেশি স্বীকৃতি প্রাচীনকাল থেকেই। যদিও বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে এই বস্ত্রের আধুনিক স্বীকৃতিকে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। আমরা জামদানির গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যকে প্রাচীনকাল থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত তুলে ধরতে আগ্রহী।

ইউনেস্কোর বিশ্বস্বীকৃতি এক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ড. নিয়াজ জামানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রুবী গজনবী, বিবি রাসেল ও শাওন আকন্দ।
 
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মো. মোশাররফ হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘দৃষ্টি’, মফিজুর রহমান বিরহীর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিরহী শিল্পগোষ্ঠী’ ও ফারহানা ইসলাম অনন্যার পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘জাগরণ ললিতকলা একাডেমি’, সালমা আকবর, সালাউদ্দীন আহমেদ, চঞ্চল খান, ফারহানা ফেরদৌসী তানিয়া, মকবুল হোসেন, আবিদা রহমান সেতু ও সারোয়ার হোসেন বাবু সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
 
যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন অভিজিৎ রায় (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), আলমাস আলী (বেহালা), ইবনে খালদুন রাজন (কী-বোর্ড) এবং নাজমুল আলম খান (মন্দিরা) ।
 
এছাড়া আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী সায়েরা হাবীব।
 
বৃহস্পতিবারের আয়োজন
বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের নবজাগৃতি ও তরুণ প্রজন্ম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপনে সোনিয়া নিশাত আমিন, আলোচনায় শাহরিয়ার কবির, নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও নুজহাত চৌধুরীর অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।
 
সন্ধ্যা ছয়টায় ইসহাক কাজল, গোলাম আবু জাকারিয়া ও ফারুক আহমদের হাতে বাংলা একাডেমি প্রবাসী লেখক পুরস্কার ২০১৩ তুলে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। বাংলা একাডেমির সভাপতি প্রফেসর অ্যামিরিটাস আনিসুজ্জামানের সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
 
সন্ধ্যায় যথারীতি পরিবেশিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।