আর যেখানে যেখানে অনেক বেশি সময় ধরে ধর্মপ্রাণদের উপবাসের পরীক্ষা দিতে হয় তার মধ্যে একটি যুক্তরাজ্য। দেশটিতে দীর্ঘ ১৯ ঘণ্টা পানাহার বর্জন করে সিয়াম সাধনার প্রমাণ দেন মুসলমানরা।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাজ্যে ১৯ ঘণ্টাই রোজা রাখতে হয়। ইফতারের পর থেকে সেহারি পর্যন্ত তারা সময় পান মাত্র ৫ ঘণ্টা। এটা খুবই অল্প। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতো বিশ্বের অন্য অংশের তুলনায় প্রায় অর্ধেক সময় কম পাচ্ছেন তারা। মূলত ‘টাইম জোন’ বা ‘বছর ভেদে অবস্থান পরিক্রমায়’ সময়ের এ তারতম্য।
ইউরোপীয় কাউন্সিল ফর ফতোয়া ও রিসার্চ এ বিষয়ে অধ্যয়ন এবং অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, অন্যদের তুলনায় যুক্তরাজ্যে রোজা খুব বেশি দীর্ঘ। ২০১৪ সালে লন্ডনের কেন্দ্রীয় মসজিদের একটি রমজান ক্যালেন্ডার প্রকাশ হয়েছিল। সেটিতে বর্ণনা করা হয়, দেশটিতে রমজানের প্রতিদিন স্থানীয় সময় অনুযায়ী ভোর ২টা ৪৮ মিনিটে ফজরের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সূর্যাস্ত বা মাগরিবের নামাজ এবং ইফতার হবে বিকেল ৯টা ২৫ মিনিটে। আর এশার নামাজ ও তারাবি অনুষ্ঠিত হবে রাত ১১টা ৩ মিনিটে।
তবে সময় নির্ধারণে প্রতিবছরই রমজানের শুরুতে দেশটিতে দু’টি বিষয়ের ওপরই গুরুত্ব দেওয়া হয়। এর একটি হলো যুক্তরাজ্যজুড়ে নতুন চাঁদ দেখতে পাওয়া। আরেকটি হলো সৌদি আরবকে অনুসরণ করা।
সেক্ষেত্রে সৌদি আরবে যদি নতুন চাঁদ দেখা যায়, তাহলে তা সময়ের স্কেল নির্ধারণ করে অবিলম্বে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আর সৌদি আরবকে অনুসরণ করেই ধর্মীয় সময় নির্ধারণ করে মুসলিম দেশগুলো। এমনই একটি অনুসরণ করে যুক্তরাজ্যও। সৌদির নতুন চাঁদ দেখা থেকেই ইসলামী শরিয়া বিধান অনুযায়ী রোজার বিভিন্ন সময় ও ঈদ-উল-ফিতরের সময় নির্ধারণ করে লন্ডনের কেন্দ্রীয় মসজিদ। এ বিষয়ে ইউরোপীয় কাউন্সিল ফর ফতোয়া ও রিসার্চের সেক্রেটারি জেনারেল শেখ হাসান হালাওয়া বলেন, ব্রিটেনে রোজা পালনে সবাইকে গুরুত্ব দিতে হবে। দীর্ঘ সময় উপবাস থাকতে হবে বলে রোজা রাখা বন্ধ করা সম্ভব নয়। যদিও গ্রীষ্মের প্রচণ্ড রকমের তাপমাত্রা ও দীর্ঘ সময় উপবাসের কারণে অনেক কষ্ট হবে। তারপরও রোজা রাখতেই হবে।
তিনি এও বলেন, রমজানের সেহারি ও ইফতারের সময় বিষয়ে আমি কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য শিগগিরই সুইডেন ও অন্য ইউরোপীয় অঞ্চলগুলো ভ্রমণ করবো। এতে অনেক অধ্যয়নও হবে এ বিষয়ে।
সর্বশেষ আধুনিক পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে ২৫ লাখেরও বেশি মুসলমান বসবাস করেন। এই সংখ্যাটি দিন দিন বাড়ছে। আগামী ১০ বছরে এ মুসলিম জনসংখ্যা দ্বিগণে দাঁড়াতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৮
টিএ/এএ