ঢাকা: ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে শেষের দিকে হঠাৎই ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে যায় একজন ফিনিশারের অভাবে। অথচ বাংলাদেশের ১৪ সদস্যের স্কোয়াডে ছিলেন দেশসেরা ‘ফিনিশার’ নাসির হোসেন।
জিততে জিততে হেরে যাওয়া ম্যাচটির পরও অনেকে ভাবতে পারেননি উপেক্ষিত নাসির একাদশে আসবেন সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই। কেননা ম্যাচের একদিন আগেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন টিম হোটেলে খেলোয়াড়দের সঙ্গে দেখা করার পর সংবাদমাধ্যমকে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়েছিলেন, কার জায়গায় খেলবে নাসির?
বোর্ড সভাপতির অমন কথায় ধরেই নেয়া হচ্ছিলো একাদশে জায়গা হবে না নাসিরের। তবে ম্যাচের দিন সকালে নেয়া সিদ্ধান্তে বাঁহাতি স্পিনার মোশাররফ হোসেন রুবেলের পরিবর্তে ফেরেন অফস্পিন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন।
একজন মাত্র বাঁহাতি (সাকিব আল হাসান) স্পিনার নিয়ে ম্যাচে নামাও কম ঝুঁকির নয়। শেষ পর্যন্ত ঝুঁকি নিতেই হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। ঝুঁকিটা না নিলে বাদ দিতে হতো অভিষেক ওয়ানডেতে (আফগানিস্তানের বিপক্ষে) দুর্দান্ত ব্যাটিং করা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে।
একাদশে ঢুকতে নাসিরের প্রতিদ্বন্দ্বী আপাতত মোসাদ্দেক নন। নাসিরের জন্য ব্যাপারটা ভালো-মন্দ দুটি মিলিয়েই। কয় ম্যাচ এক বাঁহাতিকে নিয়ে খেলবে বাংলাদেশ? দ্বিতীয় বাঁহাতি স্পিনার একাদশে যোগ হলে বাদ পড়বেন কে? এটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে সময় নিয়েই ভাবতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে। এ চিন্তা তো পরের। প্রায় এক বছর পর বাংলাদেশ দলের একাদশে ফিরেছেন, নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছেন নাসির, এটাই তো বড় ঘটনা। কেননা নাসির ব্যর্থ হলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটা শেষ হয়ে যেত গতকালই। ১২ তারিখের ম্যাচটা থাকতো কেবলই আনুষ্ঠানিকতার। এমনটা হতে দেননি নাসির।
মাশরাফির দিনে নাসির ব্যাট হাতে ২৭ বলে ২৭ রানের অপরাজিত ইনিংসের পর বল হাতে ১০ ওভারের কোটা শেষ করেন মাত্র ২৯ রান দিয়ে। বল হাতে তুলে নেন মঈন আলির উইকেটটি। বিধ্বংসী কোনো পারফরম্যান্স না হলেও ইংলিশ-বধে নাসিরের পারফরম্যান্স কতটা কাজে লেগেছে সেটি বোঝা গেছে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার কথায়, ‘নাসির ব্যাটিং তো অবশ্যই ভালো করেছে। ওই সময়ে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করেছে। আমরা সব সময় চাই ৫০ ওভার একটা খেলোয়াড় ব্যাটিং করুক। বোলিং তো আমি মনে করি অসাধারণ। ১০ ওভারে মাত্র ২৯ রান, পাশাপাশি একটি উইকেটও পেয়েছে। এর থেকে বেশি কিছু চাওয়া কঠিন। সব মিলিয়ে পেশাদারি পারফরম্যান্স করেছে নাসির। এক বছর পর একাদশে ফিরে আসায় বলতে হচ্ছে নাসির ভাগ্যবান। ’
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলে বাংলাদেশের শেষ ১০ ম্যাচে একাদশে ছিলেন না নাসির। হতাশার মাঝে আশার আলো দেখতে পেয়েছেন দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। আর নাসির সুযোগটা নিতে পেরেছেন এ জন্যই হয়তো নাসিরকে ভাগ্যবান বলেছেন মাশরাফি।
সবসময় হাসিখুশি থাকতেই পছন্দ করেন নাসির হোসেন। সাইডবেঞ্চ, ড্রেসিংরুমে থেকেই মাঠে নামতে না পারার যন্ত্রণা পোহাতে হয়েছিল। নাসিরের যন্ত্রণা হয়তো অনেকটাই কমেছে। সোমবার হোটেল রেডিসন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রাকালে নাসিরের মুখেই কেবল দেখা গেল চওড়া হাসি। হাসিটা সঙ্গে নিয়েই চট্টগ্রাম থেকে ফিরতে পারবেন তো নাসির?
চট্টগ্রামের জহুর চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচ আগামী বুধবার (১২ অক্টোবর)। দু’দলই পৌঁছে গেছে চট্টগ্রাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ১০ অক্টোবর ২০১৬
এসকে/এমআরপি