মিরপুর থেকে: আরেকটি হতাশাজনক পরাজয় মেনে নিতে হলো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ৩২ রানে হেরেছে মাশরাফির দলটি।
ঢাকা ডায়নামাইটস নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৭০ রান। আসরের দ্বিতীয় জয় পেতে হলে এই স্কোর টপকে যেতে হতো মাশরাফির কুমিল্লাকে। তবে, ৮ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লার ইনিংস থামে ১৩৮ রানের মাথায়। আট ম্যাচে কুমিল্লার জয় একটিতে। অপরদিকে, সমান ম্যাচে সাকিবের ঢাকা ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ২৭তম ম্যাচে দুপুর একটায় মাশরাফির কুমিল্লার মুখোমুখি হয় সাকিবের ঢাকা। টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার দলপতি সাকিব। চিটাগং পর্ব শেষে ঢাকায় বিপিএলের শেষ পর্বে প্রথম মাঠে নামে কুমিল্লা-ঢাকা।
ঢাকার হয়ে ব্যাটিংয়ের উদ্বোধন করতে নামেন কুমার সাঙ্গাকারা এবং মেহেদি মারুফ। এই জুটি থেকে আসে ৩৮ রান। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বিদায় নেন ইনফর্ম ব্যাটসম্যান মেহেদি মারুফ। ব্যক্তিগত ২২ রানের মাথায় স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। নাবিল সামাদের বলে আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান তিনি।
ইনিংসের ১১তম ওভারে বিদায় নেন সাঙ্গাকারা। তার আগে জাতীয় দলের সাবেক সতীর্থ মাহেলা জয়াবর্ধনের সঙ্গে গড়েন ৪৫ রানের জুটি। রশিদ খানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে সাঙ্গার ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। লঙ্কান এই গ্রেটের ২৮ বলের ইনিংসে ছিল চারটি বাউন্ডারি। দলীয় ৮৩ রানের মাথায় ঢাকা দ্বিতীয় উইকেট হারায়।
এক ওভার পর বিদায় নেন আরেক লঙ্কান গ্রেট মাহেলা জয়াবর্ধনে। এবারো উইকেট শিকারি আফগান স্পিনার রশিদ খান। এই স্পিনারের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মাহেলার ব্যাট থেকে আসে ৩১ রান। তার ২৭ বলের ইনিংসে ছিল চারটি চারের মার। দলীয় ৯৫ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় ঢাকা।
এরপর জুটি গড়েন ঢাকার দলপতি সাকিব আর মোসাদ্দেক হোসেন। ইনিংসের ১৮তম ওভারে বিদায় নেন মোসাদ্দেক। উইকেটের পেছনে লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে তিনি করেন ২৫ রান। সোহেল তানভীরের বলে আউট হওয়ার আগে ১৮ বল মোকাবেলা করে এই উঠতি তারকা দুটি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কা হাঁকান।
সাকিব শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৪১ রান নিয়ে। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের ২৬ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চার আর ১টি ছক্কার মার। সেকুজে প্রসন্ন ৪ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
কুমিল্লার হয়ে দুটি উইকেট নেন রশিদ খান। একটি করে উইকেট দখল করেন সোহেল তানভীর এবং নাবিল সামাদ।
১৭১ রানের টার্গেটে কুমিল্লার হয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও খালিদ লতিফ। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মোহাম্মদ শহীদ ফিরিয়ে দেন শান্তকে। সাকিবের তালুবন্দি হওয়ার আগে শান্ত ১৯ বলে করেন ১৭ রান। দলীয় ২৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেটের পতন ঘটে কুমিল্লার। দলীয় ৫৭ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। সাজঘরে ফেরেন আরেকবার বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ ইমরুল কায়েস। আবু জায়েদের বলে উইকেটের পেছনে সাঙ্গাকারার গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন ৭ বলে ৯ রান করা ইমরুল।
খালিদ লতিফের বিদায়ে আরও বিপাকে পড়ে কুমিল্লা। ইনিংসের ১১তম ওভারে বিদায় নেন ৩৮ রান করা খালিদ লতিফ। ব্রাভোর বলে সাঞ্জামুলের হাতে ধরা পড়ার আগে লতিফ ৩৩ বল মোকাবেলা করে চারটি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান। ১৪তম ওভারে বিদায় নেন লিটন দাস। কুমিল্লার এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান সেকুজে প্রসন্ন। উইকেটের পেছনে সাঙ্গাকারার হাতে ধরা পড়ার আগে লিটনের ব্যাট থেকে আসে ৫ রান। দলীয় ৯১ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় কুমিল্লা।
২২ বলে এক ছক্কায় ২২ রান করে ফেরেন আহমেদ শেহজাদ। ইনিংসের ১৬তম ওভারে ব্রাভোর বলে সাঞ্জামুলের তালুবন্দি হন তিনি। শেষ দিকে লড়াইয়ের আভাস দিয়ে কিছুটা ব্যাট চালানো শুরু করেন মাশরাফি। তবে, আহমেদ শেহজাদের বিদায়ের এক বল পরেই ব্রাভোর বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ম্যাশ। ৮ বল খেলে একটি ছক্কায় ১০ রান করেন কুমিল্লার দলপতি। সাকিব ফেরান ৩ রান করা রশিদ খানকে। শেষ দিকে সোহেল তানভীর করেন ১৪ রান। শেষ ওভারে নাসির হোসেনের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন সোহেল।
ঢাকার হয়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন ব্রাভো। একটি করে উইকেট পান আবু জায়েদ, মোহাম্মদ শহীদ, সেকুজে প্রসন্ন, নাসির হোসেন এবং সাকিব।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, ২৬ নভেম্বর ২০১৬
এমআরপি