এক বল বাকি থাকতে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩১১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় লঙ্কানরা। শেষ ওভারে হ্যাটট্রিক উল্লাসে মাতেন তাসকিন আহমেদ।
লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে চোখ রাখছে টিম বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাঙ্গিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন লঙ্কান অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা।
তৃতীয় ওভারের মাথায় প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার দানুস্কা গুনাথিলাকা (৯)। এরপর জুটি গড়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন উপুল থারাঙ্গা ও কুশল মেন্ডিস। দু’জন মিলে স্কোরবোর্ডে ১১১ রান তোলেন।
দলীয় ১২৯ রানের মাথায় ‘নো’ বলে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে রানআউটের ফাঁদে পড়েন থারাঙ্গা (৬৫)। সরাসরি থ্রোতে সথীর্থদের উদযাপনের মধ্যমনি বনে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এটি ছিল থারাঙ্গার ক্যারিয়ারের ২০০তম ওয়ানডে।
থারাঙ্গা বিদাল নিলেও ক্যারিয়ারের প্রথম ওডিআই সেঞ্চুরি উদযাপন করেন তরুণ কুশল মেন্ডিস। দিনেশ চান্দিমালকে নিয়ে যোগ করেন আরও ৮৩ রান। দলীয় ২১২ রানে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে এলবিডব্লুর শিকার হন দিনেশ চান্দিমাল (২৪)।
পরের ওভারেই (৩৮তম) চমৎকার ক্যাচে সেঞ্চুরিয়ান মেন্ডিসকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। কাঁধে আঘাত হানার পর পেছনে দৌড়ে গিয়ে শূন্যে থাকা বল তালুবন্দি করেন।
গুনারাত্নে-সিরিবর্ধনা জুটি (৫৫) ভেঙে উইকেটের খাতায় নাম লেখান মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্লিন বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন মিলিন্ডা সিরিবর্ধনা (৩০)। পরের ওভারেই (৪৭তম) সরাসরি থ্রোতে থিসারা পেরেরাকে রানআউট করেন মুশফিক। একইভাবে দিলরুয়ান পেরেরাকে ফেরান ‘মি. ডিপেন্ডেবল’। দু’জনই ৯ রান করে বিদায় নেন।
ইনিংসের শেষ ওভারে হ্যাটট্রিক উদযাপন করেন তাসকিন। সৌম্য সরকারের ক্যাচে পরিণত হন অাসিলা গুনারাত্নে (৩৯)। মোস্তাফিজের হাতে ধরা পড়েন সুরাঙ্গা লাকমল। হ্যাটট্রিক ডেলিভারিতে নুয়ান প্রদীপের স্ট্যাম্প ভাঙেন টাইগার পেস সেনসেশন।
একাই চারটি উইকেট দখল করেন তাসকিন। একটি করে নেন মাশরাফি, মিরাজ ও মোস্তাফিজ।
প্রসঙ্গত, এই মাঠেই প্রথম ওয়ানডেতে (২৫ মার্চ) ৯০ রানের দাপুটে জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে লিড নেয় মাশরাফির দল। ৩২৫ রানের টার্গেটে ২৩৪-এ গুটিয়ে যায় লঙ্কানদের ইনিংস। এর আগে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে শততম টেস্ট ম্যাচটি জিতে ১-১ সমতায় দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষ করেছিল সফরকারীরা।
বাংলাদেশ একাদশে কোনো পরিবর্তন নেই। অন্যদিকে, ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জে তিনটি পরিবর্তন এনেছে স্বাগতিকরা। বাদ পড়েছেন সাচিথ পাথিরানা, লক্ষণ সান্দাকান ও লাহিরু কুমারা। পেস শক্তি বাড়াতে দলে ফিরেছেন অভিজ্ঞ নুয়ান কুলাসেকারা ও নুয়ান প্রদীপ।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার কথা থাকলেও হাতের ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকওয়েলা। তার জায়গায় ডাক পেয়েছেন অফস্পিন অলরাউন্ডার দিলরুয়ান পেরেরা।
বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা দল: দানুস্কা গুনাথিলাকা, উপুল থারাঙ্গা (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস, দিনেশ চান্দিমাল (উইকেটরক্ষক), আসিলা গুনারাত্নে, মিলিন্ডা সিরিবর্ধনা, থিসারা পেরেরা, দিলরুয়ান পেরেরা, সুরাঙ্গা লাকমল, নুয়ান কুলাসেকারা, নুয়ান প্রদীপ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, ২৮ মার্চ, ২০১৭
এমআরএম