ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ডেঙ্গু প্রতিরোধে আলেমদের ভূমিকা রাখার আহ্বান মেয়র শাহাদাতের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
ডেঙ্গু প্রতিরোধে আলেমদের ভূমিকা রাখার আহ্বান মেয়র শাহাদাতের ...

চট্টগ্রাম: ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়াতে আলেম ওলামাদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।  

বুধবার (১৩ নভেম্বর) চসিক পাবলিক লাইব্রেরি সম্মেলন কক্ষে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আলেম ওলামাদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ আহ্বান জানান।

 

মসজিদের খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিনরা জুমার খুতবায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্পর্কে মুসল্লিদের সচেতন করলে তা ভালো ফল বয়ে আনবে বলে মনে করেন তিনি।

মেয়র বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মূল অস্ত্র হলো সচেতনতা।

আলেম সমাজ মসজিদে এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করলে সাধারণ জনগণ তা গুরুত্বের সঙ্গে নেবে। বিশেষ করে প্রতি জুমার খুতবায় খতিবরা যদি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেন তা জনগণ অনুসরণ করবে। মাদরাসা শিক্ষকরা যদি ক্লাস নেওয়ার সময় ছাত্রদের ডেঙ্গু বিষয়ে বলেন তাহলে ছাত্ররা সচেতন হবে। সমাজের কল্যাণে ইমাম, মুয়াজ্জিন, আলেম সমাজকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। .

টিকার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে আলেমদের সহায়তা চেয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে বিনামূল্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে কন্যা শিশুদের জন্য এইচপিভি ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। বাইরে থেকে এ টিকা নিতে ৩ হাজার টাকা লাগে, অথচ আমরা বিনামূল্যে দিচ্ছি। কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। মেমন হাসপাতালে বিনামূল্যে এনএসওয়ান ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া, প্রতিটি ওয়ার্ডে আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসকরা রোগী দেখছেন। এসব বিষয়ে আপনারা মানুষকে সচেতন করলে চট্টগ্রামকে হেলদি সিটি করতে পারব আমরা।  

ডেঙ্গুর কারণে সাধারণ মানুষ ভুগছে এবং এই রোগ থেকে রক্ষা পেতে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত বাড়ির আঙিনা, ফুলের টব, বালতি, টায়ার এবং এসির পানির ট্রেতে পানি জমতে না দেওয়া। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সচেতনতা ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব নয়। এছাড়া, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে এনএসওয়ান এন্টিজেন পরীক্ষা সেবা চালু করা হয়েছে এবং ডেঙ্গু রোগীদের জন্য মেমন হসপিটালে বিশেষায়িত ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে করপোরেশনের মশা নিধনের জন্য উন্নত ওষুধ এবং স্প্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। মশক নিধনের নতুন মস্কুবান সলিউশন প্রয়োগ করা হচ্ছে, যা পরিবেশবান্ধব এবং মশা নিধনে কার্যকর।  

মেয়র বলেন, আমরা ধর্মভীরু জাতি। আমরা আলেম-ওলামাদের অনেক সম্মান করি। আলেম-ওলামারা কোনো কথা বললে তা মানুষ অনেক মনোযোগের সাথে, গুরুত্বের সাথে শুনে। আপনারা যদি পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলোর সাথে ইসলামের সম্পর্কের দিকটি মুসল্লিদের ব্যাখ্যা করে বলেন তা মুসল্লিদের মনে স্থান করে নেবে। আপনারা মসজিদে মুসল্লিদের কাছে এই বার্তাগুলো পৌঁছে দেবেন এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করবেন। আপনারা এই বিষয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন, কারণ সাধারণ জনগণ আপনাদের কথা গুরুত্বের সাথে নেয় এবং অনুসরণ করে। আমরা সবার সহযোগিতায় একটি ডেঙ্গুমুক্ত চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে চাই।

সভার পর মেয়র আলেম-ওলামাদের সাথে নিয়ে লালদীঘি এলাকায় জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরীসহ চট্টগ্রামের আলেমরা। চসিকের মাদ্রাসা পরিদর্শক মাওলানা হারুনুর রশিদের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন মাওলানা আমানুল্লাহ। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা আবদুস সোবহান ভূঁইয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪ 
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।