চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ও সরকারি মহসিন কলেজকে সশস্ত্র শিবির ক্যাডারমুক্ত করতে আট দফা দাবি দিয়েছে ছাত্রলীগ। দাবি মেনে না নিলে কলেজ দু’টি খুলতে দেবেনা বলেও জানিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নগর ছাত্রলীগ এসব কথা জানিয়েছে। দাবি মেনে নেয়ার জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
শীতকালীন ছুটি শেষে ২ জানুয়ারি কলেজ দু’টি খোলার কথা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সশস্ত্র শিবির ক্যাডারদের হাত থেকে রক্ষা করে জঙ্গিবাদমুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধে সঠিক ইতিহাস ও চেতনার চর্চা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা আজ সময়ের দাবি। কলেজ দু’টিকে মুক্তবুদ্ধি চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা আহ সময়ের দাবি। এজন্য দাবি পূরণের আগে ২ জানুয়ারি কোনভাবেই কলেজ খুলতে দেয়া হবেনা।
ছাত্রলীগের আট দফা দাবির মধ্যে আছে, কলেজ ক্যাম্পাসে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন, মূল ফটক ছাড়া বাকি ১৬টি প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়া, ক্যাম্পাসের ভেতরে সব ধরনের আবাসিক স্থাপনা বন্ধ করে দেয়া, শিবির ক্যাডারদের পৃষ্ঠপোষক হোস্টেল সুপার-মসজিদের ইমাম ও খতিবকে অপসারণ করা, অস্থায়ী ও খণ্ডকালীন কর্মচারীদের অপসারণ ও দোকান বন্ধ করে দেয়া, তিন দশক ধরে ছাত্র সংসদের নামে আদায় করা অর্থের হিসাব সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন, ছাত্রাবাস ও ছাত্রী নিবাসের নামে মিনি ক্যান্টনমেন্টগুলো বন্ধ করে দেয়া এবং নাশকতা মামলার আসামি ছাত্রদের গ্রেফতার ও ছাত্রত্ব বাতিল।
এক প্রশ্নের জবাবে নূরুল আজিম রনি বলেন, আমরা ধর্মঘটের ঘোষণা দিচ্ছিনা। তবে আমরা কলেজ খুলতে দেবনা। কলেজ খোলার আগে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে হবে। কলেজ ক্যাম্পাসে আরেকজন তবারক কিংবা আরেকজন শাহাদাতের রক্ত ঝরুক সেটা আমরা চাইনা। এই ক্যাম্পাস কোনভাবেই সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদিদের আশ্রয়স্থল হতে পারেনা।
‘২ জানুয়ারি যদি কলেজ খোলা হয়, যদি সশস্ত্র শিবির ক্যাডাররা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, আক্রমণ করে কাউকে হত্যা করে তাহলে এর দায়ভার কে নেবে ?’ বলেন রনি।
আশির দশকে ছাত্রলীগ নেতা তবারক হোসেন ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতা শাহাদাৎ হোসেনকে হত্যার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল শিবির।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের ভূমিকারও সমালোচনা করেন ছাত্রলীগ নেতারা। নূরুল আজিম রণি বলেন, ক্যাম্পাস থেকে ককটেল উদ্ধার হয় আর পুলিশ মামলা নেয়না। শিবির ক্যাডার ধরে পুলিশকে দেয়া হলেও থানা থেকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল হোসেন রুমি, একরামুল হক রাসেল ও আবু মোহাম্মদ আরিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জয়, দীপংকর শুভ ও অভিক দাশ উত্তম, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল করিম,ওবায়দুল হক ও আকলিমা আক্তার।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ডিসেম্বর ৩১, ২০১৫
আরডিজি/আইএসএ/টিসি