শিক্ষা প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করা একাধিক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সিনিয়র শিক্ষকদের অনেকেই চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান হতে আগ্রহ প্রকাশ করলেও এ পদ পেতে ‘ক্রেজি’ চট্টগ্রামের বিভিন্ন দফতর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করা ৫ জন শিক্ষক।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর চট্টগ্রামের পরিচালক অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তী, নগরের সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক স্বপন চৌধুরী, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মুজিবুল হক, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব অধ্যাপক আবদুল আলীম এবং কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক জাহেদুল হক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেতে সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর চট্টগ্রামের পরিচালক অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তী এবং সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক স্বপন চৌধুরী।
অন্যদিকে কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক জাহেদুল হক সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের এপিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ এবং মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) শাহেদুল খবিরের মাধ্যমে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেতে মন্ত্রণালয়ে দেন দরবার করছেন বলে জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্য থেকে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হলে অগ্রাধিকার পেতে পারেন ৭ম বিসিএস এর মাধ্যমে রসায়নের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তী, ৮ম বিসিএস এর মাধ্যমে অর্থনীতির শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক স্বপন চৌধুরী এবং ৮ম বিসিএস এর মাধ্যমে উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক মো. মুজিবুল হক।
অপেক্ষাকৃত জুনিয়র শিক্ষকদের মধ্য থেকে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হলে অগ্রাধিকার পেতে পারেন ১৪তম বিসিএস এর মাধ্যমে অর্থনীতির শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক আবদুল আলীম এবং ১৪তম বিসিএস এর মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক জাহেদুল হক।
এরমধ্যে অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তী এবং অধ্যাপক স্বপন চৌধুরীর ‘ক্লিন ইমেজের’ আওয়ামী ঘরনার শিক্ষক হিসেবে পরিচিতি থাকলেও অধ্যাপক মো. মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে ‘বিএনপি কানেকশনের’ অভিযোগ রয়েছে।
বিএনপি সরকারের সময়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া এ শিক্ষক চলতি বছর চট্টগ্রাম কলেজ মাঠে জামায়াতের শীর্ষ নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর জানাজার অনুমতিও দিয়েছিলেন। যা নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে ব্যাপক বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগ।
নগরের সরকারি সিটি কলেজে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত থাকা অধ্যাপক আবদুল আলীমকে মাত্র ৩ মাস আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষাবোর্ড সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান পদে তাকে নিয়োগ দেওয়া হলে খালি হয়ে যাবে শিক্ষাবোর্ডের দ্বিতীয় প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সচিব পদটি। অধ্যাপক জাহেদুল হককে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হলে খালি হবে কলেজ পরিদর্শক পদটিও।
প্রথম নারী হিসেবে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়াম্যানের দায়িত্ব পালন করা প্রফেসর শাহেদা ইসলাম গত ১৯ নভেম্বর অবসরোত্তর ছুটিতে যান। এরপর থেকেই চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের প্রধান এ পদটি খালি রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
এমআর/টিসি