ফেনী: ঈদুল ফিতরের বাকি আর সপ্তাহ দুয়েক। এর মধ্যেই ফেনীতে পুরোদমে জমে উঠেছে ইদকেন্দ্রিক বিকিকিনি।
ঈদের আগে গত এক মাসের ব্যবধানে ফেনী শহরে উদ্বোধন হয়েছে ১০টির বেশি অভিজাত পোশাক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের শো-রুম। এর আগে থেকেই ছিল আরও বেশ কিছু। এক ছাদের নিচে অনেক পণ্য পেয়ে এসব শোরুমে ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের। বিক্রেতারা বলছেন, অন্য জেলা থেকে এ জেলায় বিক্রিও বেশি।
জেন্টেল পার্কের ব্যবস্থাপক তাদের বিক্রির সঠিক হিসাব না জানালেও বলেন, আশপাশের জেলাগুলোর চাইতে ফেনীতে তাদের বিক্রি বেশি। চলতি ঈদ মৌসুমে তারা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন।
আরেকটি ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক জানান, সব শ্রেণির ক্রেতার কথা চিন্তা করে তারা পণ্য তৈরি করছেন। যার কারণে মানুষ তাদের শো-রুমে আসছে।
ক্রেতারা জানান, দামে বেশি হলেও মানের কথা চিন্তা করে তারা শো-রুমগুলোতে ঈদের পোশাক কিনতে আসছেন। কিছু ক্রেতা অভিযোগ করেন, কতিপয় শো-রুমের পণ্যে চাকচিক্য থাকলেও মানে খারাপ। জাঁকালো উপস্থাপনের মাধ্যমে ক্রেতাদের পকেট হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।
শহরের আড়ং, সেইলর, রিচ ম্যান, টেক্স পয়েন্ট, লুবনানসহ অন্যসকল ব্র্যান্ড শপগুলোতেও দেখা গেছে ক্রেতাদের ভিড়।
একের পর এক নতুন শো-রুম আসায় কিছুটা বিপাকে পড়েছেন শহরের সাধারণ দোকানিরা। বৃহৎ পুঁজির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে লোকসানের আশঙ্কাও করছেন স্থানীয় সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
নাসিম আনোয়ার জাকি নামের স্থানীয় একজন জানান, যেভাবে বৃহৎ বিনিয়োগে শো-রুম ও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো শহরে আসছে, এতে নিশ্চিত ক্ষতির মুখে পড়বে সাধারণ ছোট বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
মুন্না নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ব্যবসা একটা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসা দরকার। যেভাবে চলছে, এভাবে চললে সাধারণ ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এদিকে দর্জিপাড়ায় নেই আগের মত ব্যস্ততা। কমেছে কারিগরের সংখ্যাও। প্রস্তুত পোশাক পণ্য ও শো-রুমের প্রসার এক্ষেত্রে জায়গা নিচ্ছে বলে মনে করছেন এ পেশার মানুষরা।
জাকির হোসেন নামের এক দর্জি বলেন, আগে যেখানে ১০ জন কারিগর কাজ করতো এখন সেখানে ৩/৪ জন কাজ করে। সেলাই পোশাকে মানুষের আগ্রহ দিনকে দিন কমছে।
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সব পক্ষ তৎপর রয়েছে। পরিবেশ ভালো থাকায় নির্বিঘ্নে বিকিকিনি করছে মানুষ।
ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য, মেয়র, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার—সবার সমন্বয়ে ঈদ বাজার নিরাপদ ও আরামদায়ক করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
চলতি ঈদ মৌসুমে এক হাজার কোটি টাকা বিকিকিনির আশা করছেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
এসএইচডি/এইচএ/