ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ডলার পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ডলার পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ

ঢাকা: চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ শিগগিরই পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আইএমএফ ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আগামী এক-দুই সপ্তাহে বিষয়টি সংস্থার নির্বাহী বোর্ডে উঠবে।

ঋণ ছাড়ের আগে তৃতীয় পর্যালোচনা করতে আইএমএফের ১০ সদস্যের একটি দল ৩ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা সফর করে। সংস্থাটির কর্মকর্তা ক্রিস পাপাজর্জিও দলটির নেতৃত্ব দেন। ওই সফরের শেষে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) আইএমএফের দেওয়া বিবৃতিতে ঋণের কিস্তির ছাড়ের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

আইএমএফ জানিয়েছে, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ চলমান ঋণ কর্মসূচির আকার আরও ৭৫ কোটি মার্কিন ডলার বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছে। এর ফলে বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ইসিএফ) এবং বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণের আকার দাঁড়াবে ৪০০ কোটি ডলারে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) কর্মসূচির আওতায় ১৩০ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা এর আগে জানিয়েছিলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশ যে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, তা মোকাবিলার জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন। কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন যে, আইএমএফের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৩০০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে। চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় অতিরিক্ত অর্থের জন্য বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ যে অনুরোধ করেছে, তা পাওয়া গেলে এই কর্মসূচির আকার দাঁড়াবে ৫৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। এরপর তিন কিস্তির অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পাওয়া যায়। গত ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। আর গত জুনে পেয়েছে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।

আইএমএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি এখনো উচ্চপর্যায়ে রয়েছে। দেশ থেকে যে অর্থ বেরিয়ে গেছে, বিশেষ করে ব্যাংকিং খাত থেকে যে অর্থ বিদেশে চলে গেছে, তা বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি করেছে। পাশাপাশি একদিকে রাজস্ব আদায় কমেছে, অন্যদিকে খরচের চাপ বেড়েছে। বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ আরও জোরদার হয়েছে আর্থিক খাতের ধকলের কারণে।

চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে গণ–আন্দোলন, বন্যা এবং সংকোচনমূলক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছে আইএমএফ। তবে নীতি শিথিল হলে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বাড়ার প্রত্যাশা করছে সংস্থাটি। কঠোর মুদ্রানীতি অনুসরণ এবং সরবরাহ–ব্যবস্থায় উন্নতির ফলে মূল্যস্ফীতি কমবে বলে মনে করে আইএমএফ। তবে অর্থনীতিতে গভীর অনিশ্চয়তা আছে বলেও মন্তব্য করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

কর অব্যাহতি অপসারণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের রাশ টেনে ধরা, মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা, বিনিময় হার আরও নমনীয় করা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে কর–রাজস্ব অনুপাত কম। তাই একটি স্বচ্ছ ও ন্যায্য রাজস্ব–ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জরুরি ভিত্তিতে রাজস্ব–সংক্রান্ত সংস্কার করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।