ঢাকা: রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শুরু হয়েছে ২১তম ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলা।
শুক্রবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে মেলা প্রাঙ্গণের পাশে বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মাসব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদসহ দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও বেসামরিক-সামরিক কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন ।
উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মেলার গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ মেলা নিয়ে অন্যদের আগ্রহও সৃষ্টি হয়েছে। বিদেশিদের অংশগ্রহণের ফলে অভিজ্ঞতা বিনিময় করা যায়। বাংলাদেশি পণ্য বাইরে প্রচুর রফতানি করা হচ্ছে। এতে নতুন পণ্য রফতানির সম্ভাবনাও বাড়ছে। বিষয়টি মাথায় রেখে ব্যবসায়ীদের কাজ করতে হবে।
‘শুধু একটি পণ্যকে ধরেই নয়, যেসব পণ্য রফতানি করা যায় তা নিয়ে ভাবতে হবে। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা আছে তা বিশ্লেষণ করতে হবে ব্যবসায়ীদের। কোন রফতানিযোগ্য পণ্য উৎপাদন করা যায় সে দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। বিশ্বে নতুন নতুন বাজার খুঁজতে হবে। পাট একসময় রফতানি হতো বিভিন্ন দেশে। মসলিন একসময় খুব নামকরা ছিল। তাই আমাদের এখন যেসব পণ্য আছে, সেগুলো বহুমুখীকরণ করতে হবে। ’
পণ্যের মান বাড়ানো এবং ব্র্যান্ডিংয়ের প্রতিও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে ব্যবসা খাতের অগ্রগতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত এ মেলা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
মেলায় প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৩০ টাকা ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা।
এবার বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছাড়াও মেলায় ৫ মহাদেশ থেকে ২২টি দেশ অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে ৭টি দেশ প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, মরিশাস, ঘানা, নেপাল, হংকং, জাপান, মরক্কো, ভুটান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
১৩ লাখ ৭৩ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে মেলা মাঠে ছোট বড় মিলে ১৬৮টি প্যাভিলিয়ন ও বিভিন্ন সাইজের ৩৮৭টি স্টল বসানো হয়েছে। এরমধ্যে ২৬টি ফুড স্টল ও ৫টি বড় সাইজের রেস্টুরেন্ট থাকছে।
এসবের মধ্যে ৬০টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ১০টি জেনারেল প্যাভিলিয়ন, ৩টি রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন, ৩৮টি ফরেন প্যাভিলিয়ন, ৩৬টি প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৩টি জেনারেল মিনি প্যাভিলিয়ন, ৬টি রিজার্ভ মিনি প্যাভিলিয়ন, ২টি ফরেন মিনি প্যাভিলিয়ন, ৬৪টি প্রিমিয়ার স্টল, ১৬টি ফরেন প্রিমিয়ার স্টল, ২৭৫টি জেনারেল স্টল ও ২৫টি ফুড স্টল এবং ৫টি রেস্টুরেন্ট থাকছে।
মেলায় একটি ই-শপ, একটি শিশু পার্ক, সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্রের আদলে ইকো পার্ক, একটি ই-পার্ক, দুইটি রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, দু’টি মা ও শিশু কেন্দ্র, একটি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, ১৪টি স্পটে গার্ডেন, ১৩টি স্পটে ৫২টি টয়লেট, ৩টি স্পটে ৭৭০টি গাড়ি রাখার জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এছাড়া মেলায় মুসল্লিদের নামাজ পড়ার জন্য একটি মসজিদ ও আনসার এবং বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যদের জন্য দু’টি ডরমেটরিও স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিগত বছরের মতো এবারও নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা দিতে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন স্থাপন করা হয়েছে। এ প্যাভিলিয়নে ফিল্ম প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন ডকুমেন্টরি প্রদর্শন করা হবে।
মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি, র্যাব, আনসার ও বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্স নিয়োজিত থাকছে।
মেলা প্রাঙ্গণের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, গেইট, পার্কিং এরিয়াসহ চারপাশে ১০০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এসব ক্যামেরা মনিটরিং করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৬/আপডেট ১৮০১ ঘণ্টা
এমইউএম/আরইউ/এইচএ/আরআই