ঢাকা, সোমবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২ মহররম ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যবসার ক্ষেত্রে ট্যাক্স একমাত্র ইস্যু নয়: মাসুদ খান

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২১
ব্যবসার ক্ষেত্রে ট্যাক্স একমাত্র ইস্যু নয়: মাসুদ খান

‘বেসরকারি খাত থেকে জিডিপিতে অবদান গত বছরের চেয়ে কমে এসেছে। হতে পারে এটা করোনার কারণে হয়েছে।

এছাড়াও অনেক কারণ আছে যা আমরা অনেকদিন ধরে বলে আসছি। ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’ তালিকায় আমাদের অবস্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৬৮তম। এদেশে ব্যবসার ক্ষেত্রে ট্যাক্স একমাত্র ইস্যু নয়। আরো অনেক বড় বাধা রয়েছে, যার সমাধান দরকার। ’

এবারের প্রস্তাবিত বাজেট ব্যবসা ও অর্থনীতির ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে, এ বিষয়ে এক বৈঠকে ইউনিলিভার কনজিউমার কেয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাসুদ খান ওপরের কথাগুলো বলেন।  

সরকারের ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব চার্টার্ড সার্টিফায়েড অ্যাকাউন্ট্যান্টস (এসিসিএ) বাংলাদেশে একটি ভার্চুয়াল গোলটেবিল বৈঠকে তিনি আরো বলেন, ‘সরকার এবার বাজেটে কয়েকটি ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ ভানো প্রণোদনা দিয়েছে। ২.৫ শতাংশ করপোরেট ট্যাক্স কমানোর কথা বহুল আলোচিত হলেও ২ শতাংশ উইথহোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির কথাটি আড়ালেই রয়ে গেছে। করপোরেট ট্যাক্সের তুলনায় এর প্রভাব অনেক বেশি। ’ 

তিনি বলেন, ‘এই বাজেটে আয়কর বাড়েনি। সরকার ৫ বছর পর আয়কর সীমা বাড়িয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা। কিন্তু আমরা যদি মূল্যস্ফীতির কথা চিন্তা করি, তবে এই আয়কর সীমা সামঞ্জ্যস্যপূর্ণ নয়। এই তিন লাখের সীমাটা খুবই কম। সরকার ইন্ডাস্ট্রির সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করেছে, কিন্তু ডিমান্ডের কথা চিন্তা করেনি। আয়করের পরিমাণ কমানো হলে মানুষের হাতে যে অতিরিক্ত টাকা থাকতো তা সরাসরি ইকোনমিতে নতুন চাহিদা তৈরি করতো। ’

গত ১২ জুন অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অন্যদের মধ্যে সামিট কমিউনিকেশনসের এমডি এবং সিইও আরিফ আল ইসলাম, পিডব্লিউসি বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার মামুন রশীদ, এসিসিএ বাংলাদেশের সিনিয়র বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার-লার্নিং শাহ ওয়ালীউল মনজুর, মার্কেটিং ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল হাসান, বিজনেস সার্ভিস ও কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার জিএম রাশেদ, সৈয়দা সাদিয়া আফরোজসহ এসিসিএ বাংলাদেশের মেম্বার এবং বিভিন্ন সেক্টরের বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।  

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন এসিসিএ বাংলাদেশের হেড অব এডুকেশন প্রমা তাপসী খান এবং আয়োজনে সহায়তা করেন এইস অ্যাডভাইজরি এবং ট্যাক্সহাউজ বাংলাদেশ লিমিটেড।

বিগত বাজেটের উদাহরণ টেনে মাসুদ খান বলেন, ‘গত বাজেটে এসএমই খাতে বরাদ্দকৃত প্রণোদনার ২৩ হাজার কোটি টাকার ৭২ শতাংশ খরচ হয়েছে। অথচ এসএমই খাতে জব ক্রিয়েশনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উৎপাদন খাতে ৯০ শতাংশ সেবা খাতে ৮০ শতাংশ জব এসএমই খাত থেকেই আসে। এই বাজেটে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এসএমই খাতের যে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন ছিল তা দেখা যাচ্ছে না। ’

তিনি বলেন, ‘কোভিডের কারণে দরিদ্রের পরিমাণ ২০.৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ হয়েছে। অনেক মানুষ চাকরি হারিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অন্যান্য অনেক দেশের মতো যদি এই নতুন দরিদ্র মানুষের মাঝে টাকা বিতরণ করা হতো, তাহলে এই টাকাটা সরাসরি ইকোনমিতে নতুন চাহিদার সৃষ্টি করতো। এটা না হবার মূল কারণ আমাদের জনগণের নির্ভরযোগ্য কোনো ডাটাবেজ নেই। ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে বাজারে যদি চাহিদা না থাকে তাহলে তো আমরা নতুন উৎপাদনে যেতে পারবো না। ’

টিকা কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতি মাসে ৫০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও এখন তা ২৫ লাখ করা হয়েছে। এতে সবাইকে টিকা দিতে বেশ কয়েক বছর লাগবে। প্রতি বছর কভিডের কারণে ইকোনমি বড় ধাক্কা খাবে। আমাদের শিক্ষাখাত বড় সমস্যার মাঝে আছে। আমরা অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছি কিন্তু তা শুধু শহরকেন্দ্রিক। গ্রামের মানুষের কাছে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং ভালো ইন্টারনেট কোনোটাই নেই। শিক্ষকরাও অনলাইন ক্লাসের জন্য প্রশিক্ষিত নন। আর আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ইন্ডাস্ট্রি ফোকাসড নয়। যদি এ সমস্যা না থাকতো তাহলে প্রতি বছর বিদেশি কর্মীর পেছনে আমদের ৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হতো না। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২১
নিউজ ডেস্ক 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।