ঢাকা, সোমবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২ মহররম ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মাগুরায় লোকসানে কলা চাষিরা

জয়ন্ত জোয়ার্দার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৫ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২১
মাগুরায় লোকসানে কলা চাষিরা মাগুরায় লোকসানে কলা চাষিরা। ছবি: বাংলানিউজ

মাগুরা: ভাগ্য বদলের আশায় কলা চাষ করেছিলেন মাগুরার কয়েকশ চাষি। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ ও কঠোর লকডাউনে কলার দাম তেমন না থাকায় দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাদের চোখে মুখে।

মাগুরার ওয়াবদা এলাকায় কলার বড় আড়ত থাকলেও কলা এবং ব্যবসায়ীরা না আসায় বেচা-বিক্রি কমে গেছে। কলা চাষিরা বলছেন একটি বছর চাষ করার পর দাম ভালো না থাকায় চাষিরা অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কঠোর লকডাউনে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করলেও ব্যবসায়ী না থাকায় কলা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
 
জেলায় চলতি মৌসুমে কলা চাষ হয়েছে ৮৮২ হেক্টর জমিতে। শ্রীপুর, শালিখা, মহম্মদপুর থেকে মাগুরা সদর উপজেলায় কলার চাষ বেশি হয়েছে। প্রথমদিকে ভালো দাম পেলেও কঠোর লকডাউন শুরুর পর থেকে কলার দাম কমে যাওয়ায় লোকসান গুনছেন চাষিরা।

ওয়াবদা কলার আড়তে যেখানে প্রতিদিন ছোট থেকে বড় ট্রাক ২০ থেকে ২৫টি লোড হত সেখানে বর্তমানে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। বড় বড় ব্যবসায়ীরা এখন আর আসছেন না। কলা বেচা বিক্রি কমে গেছে।
 
এক কাঁদি চাপা কলা (স্থানীয় নাম ঘাউর) ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। সবরি কলার কাঁদি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সাগর ও রঙ্গিন মেহের সাগর কলা কাঁদি পাইকারি বিক্রি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। সেখানে প্রতি কাঁদি কলা ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় নেমে এসেছে।
 
মাগুরা ওয়াবদা কলার আড়তে জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কলা নিয়ে আসেন ব্যাপারিরা। বিশেষ করে বেলনগর, কছুন্দি, ঘাসিয়াড়া, শ্রীপুর বারইপাড়া, রাধানগর, মাঝাইল মানন্দার তলা, মহম্মদপুর, শালিখা থেকে আসা কলা এই আড়তে বিক্রয় হয়ে থাকে। ওয়াবদা কলার আড়তে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, বগুড়া, বরিশাল, খুলনা, সিলেট, চিটাগাং থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন কলা কিনতে। বর্তমানে কঠোর লকডাউনের কারণে জেলার হাট বাজারে লোক সমাগম কম থাকায় ব্যবসায়ীরা আসছেন না। সে কারণে আড়তে বেচা বিক্রি কমে গেছে। ভালো দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চাষিরা।
 
মাগুরা সদর উপজেলার কছুন্দি ইউনিয়নের হুলিনগর গ্রামের কলা চাষি সোহরাব হোসেন বলেন, সংসারে অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পেতে কলা চাষ করেছি। কিন্তু এ বছর করোনা মহামারি ও কঠোর লকডাউনের কারণে কলার ভালো দাম না থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমার দেখা দেখি এই এলাকায় বেশ কয়েকজন কলা চাষে ঝুঁকেছেন।
 
স্থানীয় পাইকারী ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মাগুরা জেলার মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। সারাদেশে এই জেলার কলার সুনাম রয়েছে। মাগুরা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতিদিন কলা আসলেও কঠোর লকডাউন থাকায় এখন তেমন আসছে না।
 
মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ খামার বাড়ি উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক বাংলানিউজকে বলেন, জেলায় চলতি বছর কলার উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে কঠোর লকডাউনের কারণে বাইরের জেলা থেকে কলা ব্যবসায়ীরা না আসায় লোকসানে পড়েছেন চাষিরা। তাছাড়া আমরা মাঝে-মধ্যে কলা চাষিদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। তবে আমি মনে করি লকডাউন শেষ হলে কলা চাষিরা ভালো দাম পাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।