ইবি: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালামের কন্ঠসদৃশ শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত অডিও ফাঁসের পর এবার আরও দুই নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করেছে প্রশাসন।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রকাশনা ও জনসংযোগ দপ্তরের উপ-রেজিস্ট্রার রাশিদুজ্জামান খান টুটুল স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানা যায়।
বার্তাতে বলা হয়, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ও প্রকৌশল অফিসের বিভিন্ন পদের নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ৪ ও ৫ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য পরিবহন অফিসের হেলপার পদে এবং ১১ মার্চ প্রকৌশল অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ও সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদের নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডসহ ১২ মার্চ পরিবহন অফিসের ড্রাইভার পদের জব টেস্ট অনিবার্য কারণবশতঃ স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের তারিখ ও সময় জানানো হবে।
এর আগে রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুই বিভাগের শিক্ষক ও চিকিৎসা কেন্দ্রের নিয়োগ স্থগিত হয়। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় চিকিৎসাকেন্দ্রের ‘মেডিকেল অফিসার’, আজ ১০টায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান ও বিভাগের প্রভাষক এবং সকাল ১০টায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ফারহা জেবিন নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে তিনটি অডিও পোস্ট করা হয়।
অডিওর কথোপকথনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালামের বলে দাবি করা হয়।
এসব অডিওতে নিয়োগ নিয়ে ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে উপাচার্যকে বিভিন্ন কথা বলতে শোনা যায়। তবে অডিওটিতে অন্য প্রান্তের কোনো কথা শোনা যায়নি।
অডিওতে একটি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বাতিল হওয়ার কারণ ও আগামীতে বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়া সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলা হয়েছে।
এছাড়াও নিয়োগ প্রার্থীকে বিভিন্ন প্রশ্ন বলে দেওয়া হয়। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের ঘটনা নিয়ে এ আলোচনা করা হয়।
অডিওতে ওই বিভাগের অলি নামের (সংক্ষিপ্ত নাম) এক শিক্ষক প্রার্থীর নাম ধরে সম্বোধন করতে শোনা যায়।
এ ঘটনায় শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপাচার্যের নির্দেশে ইবি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান।
পরে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী ও চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়ে উপাচার্য বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।
একই দিনে অডিওতে উপাচার্যের কথোপকথনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম।
একই অভিযোগে ক্ষুব্ধ ও হাতাশা ব্যক্ত করে উপাচার্যের অবস্থান জানানোর দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
এ ঘটনায় সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ফের দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী ও চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়ে উপাচার্য বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসনের নির্দেশে কার্যালয়ে কোনো ডিভাইস আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ইবি থানা পুলিশ ও ডিএসবি তল্লাশি চালায়।
এছাড়া ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল নয়টার দিকে উপাচার্যের কন্ঠসদৃশ নিয়োগ সংক্রাস্ত অডিওগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মাইকে উচ্চস্বরে বাজানো হয়। অভিযোগ আছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে লেবারভিত্তিক কাজ করে আসা চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক নেতারা মাইকে অডিওগুলো বাজান। পরে সকাল ১০টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়ে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন করতে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩
এএটি