শাবিপ্রবি (সিলেট): শিক্ষার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে তাদর সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি, সেমিস্টার ফি ও ক্রেডিট ফি কমানো হবে বলে জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী। এ নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে বিজয় দিবস উপলক্ষে শাহপরান হল কর্তৃক আয়োজিত প্রীতিভাজ অনুষ্ঠানে এ আশ্বাস দেন উপাচার্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্য ড. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ধরনের সেমিস্টার ফি, ক্রেডিট ফি, ভতি ফি কিছুই বৃদ্ধি করেনি। এটা আগে থেকে নির্ধারণ করা ছিল। তবে আমরা বুঝতে পারছি শিক্ষার্থীদের এসব ফি পরিশোধ করতে একটু হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারা আমাদের কাছে দাবি জানিয়েছে, আমরা এসব ফি কমানোর জন্য কাজ করছি।
শাবিপ্রবিতে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি নিয়ে উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের কষ্ট লাগবে এবার প্রথমবারের মতো দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের পাঁচটি বিভাগীয় শহরে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তবে সেটা অনেক ব্যয়বহুল হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তুকি দিয়ে পরীক্ষাগুলো আমাদের নিতে হবে। তবুও শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা নিব। যদি শিক্ষার্থীদের আবেদন ফি বেশি হয়ে যায়, তাহলে তা কীভাবে কমানো যায় সেটা নিয়েও আমরা কাজ করবো। এক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
গুচ্ছ থেকে বের হওয়া নিয়ে উপাচার্য বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল গুচ্ছে থাকার ফলে শাবিপ্রবির মান অনেক কমে যাচ্ছে। যার ফলে র্যাংকিংয়ের দিক দিয়েও পিছিয়ে পড়ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে হিসেবে রূপান্তর করতে আমরা আবারো নিজস্ব ভর্তি প্রক্রিয়ায় এসেছি। তাই এ কাজে সফল হতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে উপাচার্য সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমাদের আবাসনের একটু সংকট রয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে একটি ১০তলা বিশিষ্ট ছাত্র হলের কাজ শুরু হয়ে গেছে। শীঘ্রই আরেকটি ১০তলা বিশিষ্ট মেয়েদের হলের কাজ শুরু হবে। দুটি হল হয়ে গেলে আমাদের আর কোন আবাসন সংকট থাকবে না। এছাড়া একাডেমিক ভবন, হল মসজিদসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন উপাচার্য।
অন্যদিকে শাবিপ্রবির মেডিকেল সেন্টারে চোখ, দাঁত, নাক, কানসহ বিভিন্ন রোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া, এনিয়ে অর্গানোগ্রাম তৈরি, মানসম্মত ওষুধ, সেবা নিশ্চিত, শিক্ষার্থীদের সেশনজট কমানো, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করা, দ্রুত গতির ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে কাজ চলমান রয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পরিশেষে প্রশাসনের প্রতি আস্তা রাখতে এবং শাবিপ্রবিকে এগিয়ে নিতে সকলের সহযোগিতার আহ্বান জানান উপাচার্য।
অনুষ্ঠানে শাহপরান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইফতেখার আহমেদের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. এছাক মিয়া, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও হলের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
এমএম