ঢাকা: গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দিলেন মেয়র পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম ওরফে রনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সিটির ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের পুরাতন ভবন কেন্দ্রের ৪৫১ নম্বর ভোটকেন্দ্রে সকাল ৯ টা ১৫ মিনিটে ভোট দেন তিনি।
এর আগে সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
ভোট দেওয়ার পর এই মেয়র প্রার্থী জানালেন, বিকেল ৪টা পর্যন্ত যদি সুষ্ঠুভাবে ভোটাররা ভোট দিতে পারেন, তাহলেই তিনি নির্বাচনের মাঠে থাকবেন।
ভোট দেয়া শেষে সরকার শাহনুর ইসলাম ওরফে রনি গণমাধ্যমকে বলেন, গাউছিয়ার ভোলার পার কেন্দ্রের আমাদের তিনজন এজেন্ট ছিলেন। তাদের কাউকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের কর্মীরা আমাদের এজেন্টদের প্রিজাইডিং অফিস পর্যন্ত যেতে দেয়নি।
তিনি বলেন, টিঅ্যান্ডটি কেন্দ্রে একটি সমস্যা হয়েছিল। আমাদের এজেন্টকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। পরে আমি গিয়ে তাকে কেন্দ্রে দিয়ে এসেছি। তিস্তা গেটে আমাদের কোনো এজেন্টকে ঢুকতে দিচ্ছে না সরকারপন্থীরা। তবে এখন পর্যন্ত ভেতরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। প্রিজাইডিং অফিসারসহ সবাই সহযোগিতা করছেন। কিন্তু কেন্দ্রের বাইরে নৌকার এজেন্টরা খোঁজ খবর নিচ্ছেন কে কার সমর্থন করেন। তারপরই তাদের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমার কাছে মনে হয়েছে সুষ্ঠু আছে এবং স্বাভাবিকভাবেই ভোটগ্রহণ চলছে। ইভিএমে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অসঙ্গতি পাইনি। তারপরও ভেতরে কী হচ্ছে, তা আমি জানি না। তবে আমি যে পর্যন্ত ভোট দিয়েছি সে পর্যন্ত ঠিক আছে।
শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবেন কি না- জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী রনি বলেন, আমি নির্বাচনের মাঠে শেষ পর্যন্ত থাকব। তবে ২০১৮ এর মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে চিন্তার বিষয়। কারণ ২০১৮ সালে কিন্তু বেলা ১১টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবেই হয়েছে। তারপর কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতি হলে আমি নির্বাচন প্রত্যাহার করব। তবে বেলা চারটা পর্যন্ত যদি সুষ্ঠু ভাবে ভোটাররা ভোট দিতে পারেন, তাহলেই আমি মাঠে থাকব। ভোট যদি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় তাহলে নীরব বিপ্লব ঘটবে। জয়ের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।
বিএনপির ভোটারদের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপির ভোটার যারা আছেন তারা কিন্তু নীরবে ভোট দিচ্ছেন। কারণ মামলার একটি বিষয় আছে। আপনারা সবাই লক্ষ্য করেছেন গত কয়েকদিন ধরে গাজীপুরে গ্রেপ্তার করার একটি বিষয় দেখা গেছে। জাতীয়তাবাদী শক্তিতে যারা বিশ্বাস করে, তাদের সবার ঘরে ঘরে গিয়ে তল্লাশি, গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে।
তিনি আরও বলেন, ভোটগ্রহণ তো মাত্র শুরু হলো। আমি এখন বিভিন্ন কেন্দ্রে যাব। তবে আমাদের অনেক এজেন্ট এখন ভয় পাচ্ছেন। বাইরে থেকেই তারা অনেকে চলে যাচ্ছেন। আমি একটা কথা বারবার বলছি বেশ কয়েকদিন ধরে এজেন্টদের ভয় দেখানো হচ্ছে। যারা সাহসিকতা নিয়ে ভিতরে থাকতে চাচ্ছেন, তারাই শুধুমাত্র আছেন। আমাদের সমর্থন করে এমন পরিচিত মুখ বা এজেন্টদের দেখলেই কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর পাশের গাজীপুর সিটি নির্বাচন নানা কারণে সারাদেশে আলোচিত। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে যেমন উৎসাহ আছে, তেমনই আছে নানা শঙ্কা।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) নির্বাচনে মোট ৪৮০টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জনসহ মোট ৩৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান নৌকা, স্বতন্ত্র জায়েদা খাতুন টেবিলঘড়ি, সরকার শাহানুর ইসলাম রনি হাতি, হারুন অর রশিদ ঘোড়া, গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম মাছ, জাপার এম এম নিয়াজ উদ্দিন লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলনের গাজী আতাউর রহমান হাতপাখা, জাকের পার্টির রাজু আহম্মেদ গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৩
ইএসএস/এনবি/এসজেএ/আরএইচ